Ad Code

প্রেমবাণী (সিজন ১) পর্ব ৩

লেখিকাঃ ফাতেহাতুন নিলা

 ~ এ্য্যা, এই মেয়েটি আমাকে কি বলল, আমি পাগল। শেষ মেষ এই বাচ্চা মেয়ে আমাকে পাগল উপাধি দিয়ে চলে গেল। এই আবরার সায়ানকে পাগল বলল।

এই মেয়ে তোমার নাম কি? তোমার সাহস কি করে হয় এই আবরার সায়ানকে পাগল বলার।
সায়ানের ডাকে একটু দূরে থাকা মেয়েটি তার দিকে ফিরে তাকিয়ে মুখ বাকিয়ে পুনরায় চলে যায়। এদিকে সায়ান মেয়েটির কাজ দেখে থ মেরে দাঁড়িয়ে আছে।
পিছন থেকে গাড়ির শব্দে সায়ানের খুশ ফিরে। পিছনে ঘুরে দেখে মেহরাবের গাড়ি। গাড়িটির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মেহরাব এক ভ্রু উঁচু করে।
~ এভাবে ভ্রু কুচকে আমার দিকে তাকিয়ে আছিস কেন?
~আমার কথা বাদ দে, আগে এটা বল কোন সকাল বেলা বলেছিলাম আমার বাসায় আসতে। আর রাস্তার মাঝে এভাবে স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলি কেন?
~হুহ আর বলিস না। তোর বাসায় আসতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু এখানে একটা মেয়েকে দেখে আমার পা গুলা থেমে গেছিল।কিন্তু মেয়েটা যে এমন ঝগড়ুটে হবে এটা আমার ভাবনাতেও ছিল না। দুনিয়াতে কত মেয়ে দেখলাম কিন্তু এমন বজ্জাত মেয়ে আমি আর দুটো দেখিনি।
~ তা কি করেছে ওই মেয়ে শুনি।
শুন, বলেই কিছুক্ষন আগের সমস্ত ঘটনা বলে সায়ান।
~ ঠিকি বলেছে, মন্দ বলেনি আস্ত পাগল তুই। চল এবার আমার সাথে।
দুজনে একসাথে চলে যায়।তাদের নিজ গন্তব্যে।
*★*YouTube
~ আমাদের মনে হয় মেহরাব আর শ্রেয়ার বিয়েটা তাড়াতাড়ি দিয়ে দেওয়া উচিত। আমার মেয়েরতো আর কম বয়স হয়নি। তোমার ছেলের বিয়ের করার সময় হয়ে এসেছে। কথাটি বলেন শ্রেয়ার বাবা মনিরুল ইসলাম।
~ আমি এখানে আরেকটা প্রস্তাব দিতে এসেছি। আমি চাইছি আমাদের ছেলে সাইফ এর সাথে নিদ্রিতার বিয়ে দিতে। ওর তো আর মা বাবা থেকেও নেই। আপনারাই ওর গার্ডিয়ান এখন।
~ শুন সাইফ এর মা, আমরা হয়তো নিদ্রিতাকে দেখে রাখি। প্রকাশ্যে আমরা ওর গার্ডিয়ান। কিন্তু যতই ওর মা বাবা আলাদা থাক না কেন। নিদ্রিতার বিষয়ে সকল সিদ্ধান্ত তারাই নেন।তোমার এই প্রস্তাবের কথাটা আমি আমার বোনকে জানাব। আমার বোন যা বলবে তা তোমাদের জানাব। আরেকটা কথা তোমাদের বলে দেই। মেহরাব যদি শ্রেয়াকে বিয়ে করতে চাই তাহলে আমি দিব আর যদি না চায় তাহলে বাদ।আমার ছেলের মতামতের বিরুদ্ধে আমি কিছুই করব না।
কথাটি বলেই জহির চৌধুরী ড্রয়িং রুম থেকে প্রস্থান করেন।আত্মীয়র মাঝে আত্মীয়তা করা তিনি একদমই পছন্দ করেন না।কিন্তু চাইলেও কিছু করতে পারছেন না। তার খারাপ সময়ে এই মনিরুল ইসলাম সাহায্য করেছিল। এখন এই সাহায্যের বিনিময়ে তার একমাএ ছেলে মেহরাবকে মনিরুল ইসলাম তার মেয়ের জামাই হিসেবে চাই।
~ শুন মুনিরা, তোমাদের বিপদের সময় কিন্তু এই আমি মনিরুল ইসলাম পাশে ছিলাম। ভুলে যেওনা কিন্তু। যেইভাবে তোমাদের বিপদে আমি পাশে ছিলাম ঠিক সেইভাবে তুমিও পাশে থেক। তোমার জামাই আর ছেলেকে বুঝাও রাজি করাও আমার মেয়েকে মেনে নিতে। যদি না মানে তাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে বলে দিলাম। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি আমাদের সু সংবাদ টা পেয়ে যাব। আজ আসি তাহলে।
একটি সয়তানি হাসি দিয়ে মনিরুল ইসলাম এবং তার ওয়াইফ চলে যায়।
~ আমার সুখের সংসারটা হয়তো শেষ হতে চলেছে। আমি মা আমি দেখেছি মেহরাবের চোখের ভাষা। তার মনের অবস্থা। মেহরাব শুধু নিদ্রিতাকে চাই। নিদ্রিতাকে নিয়েই ওর মনের মধ্যে সকল অনুভূতি। ছোটবেলায় নিদ্রিতাকে নিয়ে তার সকল পাগলামো এখন গভীর ভালোবাসায় রূপ নিয়েছে। কিন্তু প্রকাশ করে না। এদিকে দিন দিন মেহরাবের প্রতি নিদ্রিতার দূর্বলতা বেড়ে যাচ্ছে। কিশোরী মন দাগ কেটে যাবে। সবকিছুর পরে মেহরাবের বাবা আত্মীয়র মাঝে আত্মীয় করতে চান না ওই দিনের ঘটনার পর থেকে। এই দিকে মনিরুল ইসলাম ওঠে পরে লেগেছেন। কোন দিক যাব আমি কার কথা রাখব। জোর করে যদি ছেলেটাকে শ্রেয়ার সাথে বিয়ে দেই তাহলে সারা জীবনের জন্য ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখবে আমাকে। দুইটা হৃদয় ভেঙে যাবে। যদি মনিরুল ইসলামের কথা না রাখি তাহলে আমার এই পরিবারের ক্ষতি করবে। আমার ছেলে মেয়েগুলো যে জীবন্ত লাশ হয়ে থাকবে।কাকে বুঝাব বআমি। কি করা উচিত আমার। একদিকে মেহরাব আরেকদিকে নিদ্রিতা। অন্যদিকে মনিরুল ইসলাম। আরেকদিকে মেহরাবের বাবা জহির চৌধুরী।
এত এত চিন্তায় মুনিরা বেগমের মাথা ঘুরিয়ে উঠে।


Post a Comment

0 Comments

Close Menu