Ad Code

৩৮. আরজান ফকিরের বাড়ি - ৩

 লেখকঃ পল্লি কবি জসীম উদ্‌দীন

৩৮.

সেদিন কি একটা কারণে স্কুলের ছুটি ছিল। বছির চলিল তাহার সেই মসজিদের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করিতে। তারই মত ওরাও নানা অভাব-অভিযোগের সঙ্গে যুদ্ধ করিতেছে। ওদের কথা ভাবিতে ভাবিতে বছিরের মনে সাহসের সঞ্চার হয়। মনের বল বাড়িয়া যায়।

Facebook

বছিরকে দেখিয়া মজিদ দৌড়াইয়া আসিল, ইয়াসীন দৌড়াইয়া আসিল। তারপর তাহাকে ঘরে লইয়া গিয়া বসাইয়া কত রকমের কথা। সে সব কথা সুখের কথা নয়। অভাব অনটনের কথা। অসুখ-বিসুখের কথা। মজিদের মায়ের খুব অসুখ। মজিদকে দেখিতে চাহিতেছে। কিন্তু সে যাইবে কেমন করিয়া? তাহার বাড়ি সেই মাদারীপুর ছাড়িয়া ত্রিশ মাইল দূরের এক গ্রামে। সেখানে যাইতে আসিতে অন্ততঃ দশ টাকার প্রয়োজন। মজিদ কোথায় পাইবে এত টাকা? মাকে দেখিতে যাইতে পারিতেছে না। খোদা না করুন, মা যদি মরিয়া যায় তবে ত জন্মের মত আর তার সঙ্গে দেখা হইবে না। রাত্রে শুইতে গেলে কান্নায় বালিশ ভিজিয়া যায়। অভাব অনটন শুধু তাহাকে অনাহারেই রাখে নাই। কঠিন শৃখলে বাধিয়া তাহার স্নেহ-মমতার পাত্রগুলি হইতে তাহাকে দূরে সরাইয়া রাখিয়াছে। ইয়াসীনের দিকে চাহিয়া বছির জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি কি করতাছাও বাই?” ইয়াসীন বলে, সে হাফেজে-কোরান হইয়া কারী হইবে তখন তাহাকে কোরান শরীফের অর্থ জানিতে হইবে।

YouTube

এরূপ অনেক কথার পর বছির জিজ্ঞাসা করিল, “আচ্ছা ভাই! করিম কোথায় গ্যাল? তারে ত দেখতি পাইত্যাছি না।”

মজিদ বলিল, “করিমের একটু একটু জ্বর ঐছিল। ডাক্তার দেইখ্যা কইল, ওর যক্ষা! ঐছে। তহন উকিল সাহেব খবর পায়া ওরে এহান হাইনে তাড়ায়া দিল। যাইবার সময় করিম কানল! আমরা কি করব বাই? আমরাও তার সঙ্গে সঙ্গে কানলাম।”

বছির জিজ্ঞাসা করিল, “উকিল সাহেব ত ইচ্ছা করলি তারে হাসপাতালে বর্তি কইরা দিতি পারতেন। আইজ কাল যক্ষ্মা রোগের কত বাল বাল চিকিৎসা ঐছে।”

দীর্ঘ নিশ্বাস ত্যাগ করিয়া মজিদ বলিল, “কেডা কার জন্যি বাবেরে বাই? মানুষের জন্যি যদি মানুষ কানত, তয় কি দুইনায় এত দুষ্ণু থাকত?”

DailyMotion

একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলিয়া বছির জিজ্ঞাসা করিল, “করিম এহন কোথায় আছে। তোমরা কবার পার?”

মজিদ বলিল, “তা ত জানি না বাই। তার সঙ্গে দেখা করতি উকিল সাব আমাগো বারণ কইরা দিছেন। তয় হুনছি সে দিগম্বর সান্যালের ঘাটলার ফকির মিছকিনগো লগে থাহে। সে চইলা যাওয়ায় এহন আর আমরা কোথায় কার বাড়ি খাওয়া লওয়া ঐত্যাছে। তার খবর পাই না। কতদিন না খায়াই কাটাই। ও আমাগো কত উপকারে লাগত। আমরা উয়ার কোন উপকারেই আইলাম না।”

বছির বলিল, “বাই। একদিন আমাগো দিন আইব। গরীবের দিন, না খাওয়া ভুখাকা মানষির দিন আইব। তোমরা এখানে থাইকা ইসলামী শিক্ষা লও। আমি ইংরাজী শিহি। তারপর উপযুক্ত হয়া আমরা এমন সমাজ গঠন করব সেহানে দুঃখিত লোক থাকপি না। একজন ঠ্যাংয়ের উপর ঠ্যাং দিয়া খাবি আর হাজার হাজার লোক না খায়া মরবি এ সমাজ ব্যবস্থা আমরা বাঙব। এই সমাজরে ভাইঙ্গা চূর্ণ বিচূর্ণ কইরা নতুন মানুষের সমাজ গড়ব। তার জন্যি আমাগো তৈরী ঐতি অবি। আরও দুঃখ কষ্ট সহ্য কইরা লেহাপড়া শিখতি অবি।”

TikTok

মসজিদের বন্ধুদের কাছে বিদায় লইয়া বছির চলিল দিগম্বর সান্যালের ঘাটলায়। চকবাজারের মধ্য দিয়া পথ চলিয়া গিয়াছে ঘাটলায়। ঘাটলার দুইপাশে কত দেশ বিদেশের নৌকা আসিয়া ভিড়িয়াছে। ঘাটলার স্বল্প পরিসর ঘরে নোংরা কাপড় পরা পাঁচ সাত জন ভিখারী পড়িয়া আছে। ও ধারে একজন সন্ন্যাসী তার কয়েক জন ভক্তকে লইয়া গাঁজায়। দম দিতেছে আর নিজের বুজুরকির কাহিনী বলিতেছে। কিন্তু কোনখানেই ত করিমের দেখা মিলিল না। অনেক খোঁজাখুজির পর এক কোণে একটি লোককে দেখিতে পাইল। মানুষ না কয়খানা হাড়গোড় চিনিবার উপায় নাই!

সামনে যাইতেই লোকটি বলিয়া উঠিল, “ও কেডা বছির বাই নাহি? আমার একটা কথা হুইনা যাও।” বছির বিস্ময়ে লোকটির দিকে চাহিয়া রহিল।

“আমারে চিনবার পারলা না বছির বাই! আর চিনবা কেমন কইরা? আমার শরীলে কি আর বস্তু আছে? আমি করিম”।

“করিম! আইজ তুমার এমন অবস্থা ঐছে?” বছির কাছে যাইয়া বসিয়া দুইহাতে করিমের মুখ সাপটাইয়া দিল। সমবেদনার এই স্পর্শে করিমের দু’চোখ বহিয়া ফোঁটায়। ফোঁটায় জলধারা বহিতে লাগিল।

করিম বলিল, “তুমার সঙ্গে যে দেখা অবে তা কুনুদিনই বাবি নাই বছির বাই। দেখা যহন ঐল, তোমার কাছে কয়ডা কথা কব।”

Threads

বছির বলিল, “কথা পরে অবি বাই। তুমি বইস। তুমার জন্যি কিছু খাবার আনি।” এই বলিয়া বছির নিজের পকেট হাতড়াইয়া চারিটি পয়সা বাহির করিয়া সামনের দোকান হইতে একখানা রুটি কিনিয়া আনিল।

সেই রুটিখানা করিম এমনই গোগ্রাসে খাইতে লাগিল যে বছিরের ভয় হইতে লাগিল, পাছে সে গলায় ঠেকিয়া মারা যায়। সে তাড়াতাড়ি তার টিনের কৌটার গ্লাসটায় পানি লইয়া সামনে বসিয়া রহিল। রুটিখানার শেষ অংশটুকু খাইয়া করিম ঢক ঢক করিয়া টিনের গ্লাসের সবটুকু পানি খাইয়া ফেলিল।

“কতদিন খাই না বছির বাই। রুটিখানা খায়া শরীলে একটু বল পাইলাম। যহন চলতি পারতাম এহানে ওখানে মাইঙ্গা আইনা খাইতাম। আইজ কয়দিন সারা রাইত এমনি কাশি ওঠে যে দিনে আর চলবার পারি না।”

Instagram

যে জায়গাটায় করিম শুইয়াছিল সেখানে আখের ছুবড়া,ছোবড়া কাগজ প্রভৃতির আবর্জনা জমিয়াছিল। বছির সে সব পরিষ্কার করিয়া তাহার ময়লা চাঁদরের বিছানাটি ঝাড়িয়া ঝুড়িয়া সমান করিয়া দিল।

করিম জিজ্ঞাসা করিল, “বছির বাই! তুমি কি আমার মসজিদের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করছিলা? কতদিন তাগো খবর পাই না। তারাও আমার খোঁজ লয় না। আর কি কইরাই বা খবর নিবি? উকিল সাব হুনলি তাগো ত আর মসজিদে রাখপি না।”

বছির আচ্ছা করিম! তুমি এখানে রইছ কেন? হুনছি তোমার মা আছে, দুইডা ভাই-বোন আছে। তাগো কাছে চইলা যাওনা কেন?

ArtWorks

করিম উত্তর করিল, “তাগো কাছেই যাবার চাইছিলাম। কিন্তু উকিল সাব কইলেন আমার এ ব্যারাম ছোঁয়াইচা। আমি যদি বাড়ি যাই, আমার মার–আমার ভাই-বোনগো এই ব্যারাম ঐব। হেই জন্যিই বাড়ি যাই না। আমি ত বাঁচপই না। আমার মা, ভাই-বোনগো এই ব্যারাম দিয়া গেলি কে তাগো দেখাপ? আর হোন বাই! তুমি যে আমারে চুইলা, বাড়ি যায়া সাবান পানি দ্যা গাও গতর পরিষ্কার কইরা নিও। বড় বুল। করছি বাই। কেন আমারে ‘বার সময় তোমারে বারণ করলাম না?”

“আমার জন্যি তুমি বাইব না করিম! আমি তোমারে ডাক্তার খানায় নিয়া বর্তী করায়া দিব।”

“ডাক্তারখানায় আমি গেছিলাম বছির ভাই। তারা এই ব্যারামের রোগীগো বর্তী করে না। হুনছি ডাহার শহরে এই ব্যারামের হাসপাতাল আছে। সেহানে বর্তী ঐতে অনেক টাহা পয়সা দিয়া ফটোক উঠায়া পাঠাইতি অয়। তা আমি হেই টাহা পয়সা কোথায় পাব? আমার জন্যি বাইব না বছির বাই। কালে যারে দরছে তারে কে উদ্ধার করবি।”

কিছুক্ষণ নীরব থাকিয়া করিম বলিল, “আচ্ছা বছির বাই! আমার মসজিদের দোস্তগো লগে তোমার দেখা অয়?”

“আইজ তাগো ওহানে গেছিলাম। তারাই ত তোমার খবর কইল।”

“তারা সব বাল আছে? মজিদ, আরফান, আজিম, ওরা বাল আছে?”

“তারা সগলেই তোমার কথা মনে করে।”

WhatsApp

“দেহ বাই! আমি এখানে পইড়া আছি। কোথায় কোথায় মেজবানী হয় তাগো খবর। দিবার পারি না। হয়ত ওরা কতদিন না খাইয়া থাহে। মজিদরে তুমি কইও বাই! ওরা যেন রোজ মাছের বাজারে আর দুধির বাজারে যায়। এ সগল জায়গায় একজন না একজন অনেক মাছ কেনে–অনেক দুধ কেনে। তাগো বাড়িই মেজবানী হয়। বাজারের মদ্দিই তাগো ঠিক ঠিকানা জাইনা নিয়া তাগো বাড়ি গেলিই ঐল। ফুরকানিয়া মাদ্রাসার তালেম-এলেমগো কেউ না খাওয়ায়া ফিরায়া দিবি না। মজিদের সঙ্গে দেখা কইরা এই খবরডা তারে কইও।”

“তা কব বাই। করিম! তুমি এহন ঘুমাও। আমি বাড়ি যাই।”

“হ যাও বাই! যদি বাইচা থাহি আর একবার আইসা আমারে দেইখা যাইও! তোমারে কওনের আমার একটা কথা আছে।”

বাড়িতে ফিরিয়া ফকির-মার কাছে বছির করিমের সকল ঘটনা বলিল।

ফকির-মা বলিল, “বাবা! আমি একদিন যায়া ওরে দেইখা আসপ।”

সত্য সত্যই বছিরকে সঙ্গে লইয়া ফকির-মা একদিন করিমকে দেখিতে আসিল। সেদিন করিমের অবস্থা খুবই খারাপ। জ্ঞান আছে কি নাই। ফকির-মা তার আঁচল দিয়া অনেকক্ষণ করিমকে বাতাস করিল। মাথার চুলে হাত বুলাইয়া দিল। কিছুক্ষণ পরে করিমের জ্ঞান ফিরিয়া আসিল। চক্ষু মেলিয়া করিম ডাকিল, “মা! মাগো!”

Email

ফকির-মা বলিল, “এই যে গোপাল। আমি তোমার সামনে বইসা আছি।”

চক্ষু মেলিয়া করিম দেখিল, শিয়রে বসিয়া যে মেয়েটি তার চোখে মুখে হাত বুলাইতেছে সে তার নিজের মা নয়। কতই যেন নিরাশার একটি দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলিয়া সে আবার চক্ষু মুদ্রিত করিল। ফকির-মা সবই বুঝিতে পারিল। সে তাহার চুলের মধ্যে নখ বুলাইতে বুলাইতে বলিল, “বাজান! মায়ের কোন জাতি নাই। সকল মায়ের মধ্যে তোমার সেই একই মা বিরাজ করত্যাছে। আমার ফকির কইছে,

নানান বরণ গাভীরে একই বরণ দুধ,
আমি জগৎ ভরমিয়া দেখলাম একই মায়ের পুত।

গোপাল! একবার চক্ষু মেলন কইরা চাও।”

করিম চক্ষু মেলিয়া চাহিল। ফকির-মা গ্রাম হইতে একটু দুধ লইয়া আসিয়াছিল। তারা ধীরে ধীরে করিমের মুখে ঢালিয়া দিল। দুধটুকু পান করিয়া করিমের একটু আরাম বোধ। হইল। ফকির-মার হাতখানা বুকের উপর লইয়া করিম বলিল, “ফকির-মা! আমার ত দিন শেষ হয়া আইছে। কিন্তুক আমার ভড়ই ভয় করতাছে।”

Facebook

ফকির-মা তাহাকে আদর করিতে করিতে বলিল, “বাজানরে! আমার ফকির কইছে কোন কিছুতেই ভয় করতি নাই। মরণ যদিই বা আসে তারে গলার মালা কইরা নিবি। মরণ তো একদ্যাশ থইনে আর এক দ্যাশে যাওয়া। সে দ্যাশে হয়ত এমুন দুস্কু কষ্ট নাই। হয়ত সে দ্যাশে তোমার মায়ের চায়াও দরদী মা আছে–বন্ধুর চায়াও দরদী বন্ধু আছে। নতুন দ্যাশে যাইতি মানুষ কত আনন্দ করে। যদি সে দ্যাশে তোমার যাইতিই হয়, মুখ কালা কইরা যাইও না বাজান! খুশী মনে যাইও ।”

ফকির মায়ের হাতখানা আরও বুকের মধ্যে জড়াইয়া করিম বলিল, “ফকির-মা! তোমার কথা শুইনা বুকির মদ্দি বল পাইলাম। আমার মনে অনেক সাহস আইল।”

ফকির-মা বলিল, “বাজানরে! আমার ফকির যে আনন্দ ধামে বিরাজ করে। তাই যেহানে যাই, সেহানেই আমার ফকির আনন্দ আইনা দেয়। আমার ফকিরের দরবারে নিরাশা নাই বাজান!” এই বলিয়া ফকির-মা একটি গান ধরিল–

ধীরে ধীরে বাওরে নৌকা
আমারে নিও তোমার নায়।
পদ্মা নদীর তুফান দেইখ্যা
প্রাণ করে হায় হায়,
ও মাঝি শক্ত কইরা হাইল ধরিও
আজকা আমার ভাঙা নায়।
আমি অফর বেলায় নাও ভাসাইলাম
অকুল দরিয়ায়;
কূলের কলঙ্ক হবে
যদি তরী ডুইবা যায়।
তুফানের বানাইছি বাদাম
মেঘের বানছি ছয়া,
ঢেউ-এর বৈঠা বায়া মাঝি
আমারে যাও লয়া।
ডুবুক ডুবুক ভাঙা তরী
ডুবুক বহু দূর,
ডুইবা দেখব কোথায় আছে
ডবুনিয়ারপুর।

YouTube

গান গাহিতে গাহিতে ফকির-মার দুইচোখ জলে ভাসিয়া যাইতে লাগিল। গান শেষ হইলে করিম বছিরকে কাছে ডাকিয়া বলিল, “বছিরবাই! তোমার সঙ্গে আমার একটা কথা ছিল। সেদিন কইবার পারি নাই। আজ তোমারে কয়া যাই।”

আরও নিকটে আসিয়া বছির বলিল, “কও ত বাই! কি কথা?”

কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া করিম বলিল, “বছিরবাই! আমার দিন ত ফুরায়াই আইছে। মা বাপের লগে আর দেখা অবি না। তারা যদি হোনে আমি পথে পইড়া মরছি সে শোগ তারা পাশরতি পারবি না। তুমি তাগো কাছে কইও, আমি হাসপাতালে যায় মরছি। অনেক বড় বড় ডাক্তার কবিরাজ আমার চিকিচ্ছা করছে। আমার কোরান শরীফখানা আমার মা জননীরে দিও। এই কেতাবের মদ্দি অনেক সান্ত্বনার কথা আছে। কাউরে দিয়া পড়ায়া মা যেন তা শোনে। তাতে সে আমার যোগ কতকটা পাশরতি পারবি।” এই বলিয়া করিম হাঁপাইতে লাগিল।

DailyMotion

বছির করিমের মুখে হাত বুলাইতে বুলাইতে বলিল, “ভাই করিম! তুমি অত কথা কইও না। দেখছাও না তুমি কেমন হাঁপায়া উঠছাও। একটু চুপ কইরা থাহ।”

করিম বলিল, “না বাই! আমারে চুপ করতি কইও না। আমার বেশী সময় নাই! আর একটা মাত্র কথা। আমার ঝুলির মদ্দি একগাছা রাঙা সূতা আছে। আমার ছোট বোনটিরে নিয়া দিও। তারে কইও, তার গরীব ভাইজানের ইয়ার চাইতে বাল কিছু দিবার শক্তি ছিল না।” বলিতে বলিতে করিমের কাশি উঠিল। সেই কাশিতে তার বুকখানা যেন ফাটিয়া যাইবে । তারপর আস্তে আস্তে সে চিরনিদ্রায় ঘুমাইয়া পড়িল। তার মুখখানা কাপড় দিয়া ঢাকিয়া ফকির-মা আবার গান ধরিল–

চল যাইরে,
আমার দরদীর তালাশেরে
মন চল যাইরে।



Post a Comment

0 Comments

Close Menu