Ad Code

বর্ষণ বিলাস পর্ব - ১৬

 লেখিকাঃ তাহিনা আইরাত ইরা

হাউমাউ করে কেঁদে যাচ্ছে তটিনী। আরিফা বেগমের পায়ে দুটো সেলাই লেগেছে। রান্নাঘরে হঠাৎ মাথা ঘুরে যায় আরিফা বেগমের। তাল সামলাতে না পেরে পড়ে যান আর তার পা গিয়ে লাগে পাশে রাখা বটি তে। যার ফলে তার পায়ে গভীরভাবে আঘাত লাগে।
তটিনীর এসব কাটাছেড়াতে ফোবিয়া। আরিফা বেগমের এমন অবস্থা দেখে সেই যে ভয় পেয়েছে এখনো সেই রেশ আছে। তৌফিক ইসলাম চুপ করে বসে আছেন। আজকাল তার পরিবারের উপর বেশ বিপর্যয় চলছে। প্রথমে তটিনীর এক্সিডেন্ট, মোহ'র দেখা পাওয়া তারপর আবার হারিয়ে যাওয়া, আরিফা বেগমের আঘাত পাওয়া এসব তার মনে এক গভীর দাগ কেটেছে। কন্যা ও স্ত্রীকে ছাড়া যে তিনি বাঁচ ন্নবে ন না তা তিনি বুঝে গেছেন। পাশে থাকা তটিনীকে বুকে টেনে নেন তৌফিক ইসলাম। বাবার বুকে ঠাই পেয়ে ষোড়শী তটিনীর ও কান্না কিছুটা থামে।
______________________Facebook
প্রহর ঘরে বসে কাঁদছে। আজ মোহ চলে গিয়েছে। কারো নিষেধ শুনলো না সে। একা একাই চলে গেল। প্রভা নতুন বাসা ঠিক করে দিয়েছে। চলে যাওয়ার আগে মোহ প্রহরকে সবচেয়ে বড় গিফট টা দিয়ে গেছে। ডিভোর্স লেটার। ডিভোর্স লেটার টা আরেকবার হাতে নেয় প্রহর। বুকের ভিতর টা পুড়ে যায় প্রহরের। ভালোবাসার নাম করে মোহ'র জীবনটা শেষ করে দিয়েছিল প্রহর। আর আজ, প্রহরের সুখ শান্তি কেড়ে নিয়ে গেল মোহ। প্রহরের কান্নার মাঝেই দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ আসে। প্রহর নিজেকে সামলে দরজা খোলে। প্রভা এসেছে।
“ভাই, মোহ তো চলে গেল। আমাদের তো একবার ওর সাথে দেখা করা উচিৎ।”
প্রভার কথায় প্রহরের বুকের ভিতর দুমড়ে মুচড়ে যায়। মৃদু হাসে সে। প্রভার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,
“হুম। যাওয়া উচিৎ তো।”
প্রভা প্রহরের চোখে চোখ রাখে। চমকে ওঠে সে। প্রহরের চোখজোড়া কান্নার চোটে লাল হয়ে গেছে। মুখ ও ফুলে গেছে। চুল উষ্কখুষ্ক। প্রভা উদ্দীপিত হয়ে বলে,
“ভাই? তোমার এ অবস্থা কেন? কী হয়েছে?”
প্রভাকে এমন উত্তেজিত হতে দেখে প্রহর তাকে বলে,
“কিছুই হয় নি প্রভা। বাদ দে।”
প্রভা থেমে যায়। টলমল চোখে চেয়ে বলে ওঠে,
“তুমি কী কেঁদেছো?”
প্রহর মাথা নিচু করে ফেলে। কোনো উত্তর দেয় না সে। প্রভা আবারো নিভু নিভু কণ্ঠে বলে,
“কেন কেঁদেছো ভাই? আমায় বলবে না?”
প্রভার এহেন কথায় প্রহর ভয় পায়। প্রভা যদি সব জানে তবে তাকে আর ভাই বলে ডাকবেনা নিশ্চয়ই। নিজের একমাত্র ছোট বোনটার কাছে অপরাধী হয়ে যাবে সে। উহু, সে তো অপরাধীই ছিল। প্রহরের ভাবনায় ব্যাঘাত ঘটে প্রভার কথায়,
“ভাই, প্লিজ আমাকে সব বলো। কেন কাঁদছো তুমি?”
প্রভা থামে। কিছু একটা চিন্তা করে আবারও বলে,
“তুমি কী মোহ কে পছন্দ করো?”
প্রহরের চোখমুখে অপরাধবোধ দেখা যায়। প্রভা খুব ভালোভাবে প্রহরের দিকে খেয়াল করে। প্রহরের হাত ধরে সে বলে,
“ভাই, আমায় সব কিছু বলো। প্লিজ।”

প্রহর এবার চোখমুখ শক্ত করে। প্রভার উদ্দেশ্যে বলে,
“শুনতে চাস সব? তাহলে শোন। তিন বছর আগে...


Post a Comment

0 Comments

Close Menu