Ad Code

প্রেমবাণী (সিজন ১) পর্ব ২

লেখিকাঃ ফাতেহাতুন নিলা

মধ্যরাত চারদিকে অন্ধকার। এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। থেমে থেমে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। চৌধুরী মেনশনের গেইট দিয়ে মেহরাবের কালো গাড়িটা প্রবেশ করে। গাড়িটা পার্কিং করে বাসার ভিতরে যেই পা রাখতে যায় এমনি মেহরাবের মা মিসেস মুনিরা চৌধুরী তার পথ আটকে দাঁড়ায়।

~ এত রাত হলো কেন তোমার?
~ কাজ ছিল।
~তাই বলে এত রাত। তুমি জান কতটা চিন্তায় ছিলাম। তোমার ফোন কোথায়?
~ চার্জ নেই। আমি অনেক ক্লান্ত আম্মু রুমে গেলাম। আরেকটা কথা তোমার বোনের মেয়েকে বলে দিও আমার কাছ থেকে যেন দূরে থাকে। আর তোমার মাথায় যদি তোমার বোনের মেয়ে শ্রেয়াকে আমার বউ করার চিন্তা থাকে তাহলে তা ঝেড়ে ফেলে দেও। আমি আগেও বলেছি এখনো বলছি।
~ তুমি কি থ্রেট দিচ্ছ মেহরাব।
~ তুমি আমার মা হও। আসা করি বুঝতে পেরেছ।
কথাটি বলেই নিজের রুমের দিকে চলে যায় মেহরাব। মিসেস মুনিরা ছেলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকেন। অনেক পরিবর্তন হয়েছে তার ছেলের মাঝে। আগে শুধু মা মা করত যা বলতেন তিনি তাই শুনত কিন্তু এখন তার ছেলে আগের মতো নেই। কথাগুলো ভেবেই তিনি একটা দির্ঘশ্বাস ফেলেন। তার ছেলে এতটা পরিবর্তন কেন হলো তিনি এটাই বুঝে উঠতে পারছেন না।
*★*YouTube
অন্ধকার রুমটির আস্তে করে দরজা ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করে মেহরাব।প্রবেশ করেই দেখতে পায় তার প্রেয়সি কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে আছে। হালকা ডিম লাইটের আলোই দেখা যাচ্ছে রুমের মধ্যে থাকা সবকিছু। মেহরাব ধীর পায়ে হেটে যায় ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা নিদ্রিতার কাছে। এক পলক তার প্রেয়সিকে দেখে নিঃশব্দে বিছানা থেকে একটু দূরে থাকা পড়ার টেবিলটির কাছে এগিয়ে যায়। টেবিলের মধ্যে থাকা তার কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি খুঁজতে থাকে এবং পেয়েও যায়।
★খুব শীঘ্রই তোমার #প্রেমবাণী গ্রহণ করব প্রিয় প্রেয়সি। খুব তাড়াতাড়ি প্রকাশ্যে আমার ঘরের দরজা খুলে দিব। আর কিছুটা সময় অপেক্ষা কর প্রিয় কিছুটা সময়। ভালোবাসি আমিওতো তোমায় শুধু সময়ের জন্য অপেক্ষা আছি। তোমার যত অভিমান আছে কর। গুড়িয়ে দেব তোমার অভিমান খুব তাড়াতাড়ি প্রেয়সি।
কথাগুলো বলেই পুনরায় চোখ বুলাই তার হাতে থাকা ডাইরিটাতে। ডাইরিটা আগের জায়গায় রেখে এক পলক নিদ্রিতাকে দেখে নিঃশব্দে রুম থেকে প্রস্থান করে মেহরাব।এটি তার নিত্যদিনের কাজ। প্রতি রাতে নিদ্রিতার ঘুমানোর পরে রুমে এসে এক পলক তাকে দেখে তারপর ডাইরিটা দেখা। এই ডাইরিটার মধ্যেই যে তাকে নিয়ে তার প্রেয়সি অনুভূতি, অভিযোগ, অভিমান সব কিছু লিখে রেখেছে। এটা যে তাকে জানতে হবে।
*★*TikTok
গুমোট পরিবেশ, ভ্যাপসা গরম। সূর্যের কিরণ চারদিকে তীব্রভাবে আচঁড়ে পড়ছে। সূর্যের এই তেজটা ভালো লাগছে না বলেই হয়তো মেঘের কণাগুলো তাকে ডাকা দিতে ব্যস্ত।
এই ব্যস্ত শহরে ব্যস্তমানুষগুলো ছোটে চলছে তাদের নিজ নিজ কাজের গন্তব্যের দিকে। স্কুল কলেজের ছাত্রছাএীরাও ছুটে চলছে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
এক সপ্তদশী কন্যা পড়নে তার কলেজের সাদা এপ্রোণ মাথায় লাল রঙা হিজাব। কখন থেকেই রাস্তার এপাশ আর ওপাশ ঘুরে বেড়াচ্ছে। মুখে বিড়বিড় করে কি যেন বলছে। আর এই কন্যার প্রতিটা কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে একজন যুবক। যুবকটি এগিয়ে গেল সেই মেয়েটির কাছে।
~ এই যে মিস, আপনি এখানে ঘুরপাক খাচ্ছেন কেন এভাবে?
যুবকটির কথায় মেয়েটি ছোট ছোট চোখ করে তাকায়।
~ সেটা আপনাকে কেন বলব?
মেয়েটির করা পাল্লা প্রশ্নে যুবকটি ভ্রু কুঁচকে তাকায়।
~আমি তোমার বড়। তাই আমি যা বলব তার উওর দিবে তা না করে তুমি পাল্টা প্রশ্ন করছ।
যুবকটির কথায় এবার মেয়েটি তার দুই হাত ভাজ করে দাড়ায়।
~বলেন এবার আপনার কি প্রশ্ন। নির্ঘাত আমি ভালো মেয়ে তাই কিছু বলছি না।
~তোমাকে কখন থেকে দেখছি এখানে। একবার রাস্তার এই পাশ তো আরেকবার ওই পাশ এভাবে ঘুরপাক খাচ্চ কেন?
Instagram
~ এমনি।
~ এমনি নাকি অন্য কিছু। আমারতো মনে হয় কলেজ না যাওয়ার ধান্দা।
~ দেখুন আপনি কিন্তু বেশি করছেন। ধুর আপনার মতো একটা পাগলের সাথে কথা বাড়ানোর ইচ্ছা নাই আমার বলেই মেয়েটি চলে যায় এখান থেকে।
~ এ্য্যা, এই মেয়েটি আমাকে কি বলল, আমি পাগল। শেষ মেষ এই বাচ্চা মেয়ে আমাকে পাগল উপাধি দিয়ে চলে গেল। এই আবরার সায়ানকে পাগল বলল।
এই মেয়ে তোমার নাম কি? তোমার সাহস কি করে হয় এই আবরার সায়ানকে পাগল বলার।
সায়ানের ডাকে একটু দূরে থাকা মেয়েটি তার দিকে ফিরে তাকিয়ে মুখ বাকিয়ে পুনরায় চলে যায়। এদিকে সায়ান মেয়েটির কাজ দেখে থ মেরে দাঁড়িয়ে আছে।

Post a Comment

0 Comments

Close Menu