Ad Code

সেই তুমি (সিজন - ৩) পর্ব - ১৪

 লেখিকাঃ তাবাসসুম কথা

"আজকে থেকে তোমার ক্লাস শুরু হচ্ছে। গেট রেডি ফাস্ট।"

- কফিতে চুমুক দিতে দিতে হীর কে উদ্দেশ্য করে কথাটা বললো তুর্য।
-- কিসের ক্লাস?
-- ইন্টার পাসও করতে চাওনা বুঝি? আজ থেকে রেগুলার ক্লাসে যাবা। সামনে এক্সাম।
-- ধ্যাত্ এই পড়ালেখা ভালো লাগে না। বিয়ের পর কেউ পরে নাকি! (ফিসফিসিয়ে)
-- কি বললে?
-- ককিছু না। রেডি হচ্ছি।
তুর্য অফিসে যাওয়ার পথে আমাকে ক্লাসের জন্য ড্রপ করে গেলেন। প্রথমে পুনরায় পড়ার কথা শুনে মন খারাপ হয়েছিল বটে কিন্তু এখন অনেক ভালো লাগছে। বাড়ির টেনশন যুক্ত পরিবেশ থেকে বেরিয়ে আলাদা একটু সময় কাটাতে পেরে মন খুব হালকা হয়ে গিয়েছে।
ক্লাস শেষ হতে বিকেল হয়েযায়। এখান থেকে চৌধুরী মেনশনের দুরত্ব অনেক। একা এতোটা পথ আগে কখনও যাওয়া হয় নি। সবসময় তাফসির সাথেই আসা যাওয়া করেছি। কিন্তু আজ... একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সামনের দিকে হাঁটতে শুরু করলাম। এখানে দাঁড়িয়ে থাকলে আরও সময় নষ্ট হবে। কেনো যেনো পুরো রাস্তা আজ খালি। একটা রিকশাও নেই। কেমন ভয় ভয় লাগছে একা এভাবে হেঁটে যেতে। হঠাত্ মনে হচ্ছে আমার পিছনে আরও কয়েকজন হাঁটছে। প্রথমে মনের ভুল ভাবলেও, লোকগুলোর আমার পিছু পিছু আসা থামছে না। এবার আমার সত্যি অনেক ভয় হচ্ছে। তারা যদি কোনো খারাপ উদ্দেশ্যে পিছু নিয়ে থাকে!
পিছু নেওয়া লোকগুলো থেকে বাঁচার জন্য যতো দ্রুত সম্ভব হেঁটে চলেছি। কিন্তু তারা আমার সাথে তাল মিলিয়ে আরও দ্রুত চলছে। হঠাত্ সামনে কারো সাথে ধাক্কা লাগলে আমি থমকে দাঁড়ালাম।
"তুর্য!"
আকুতি ভরা কন্ঠ নিয়ে সামনে থাকা মানুষটাকে দু হাতে জরিয়ে নিলাম।
নিজের বুক থেকে হীর মুখ তুলে তার দু হাতের আজলে নিয়ে নেয়ে তুর্য। ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে গিয়েছে হীর। দেখেই বোঝা যাচ্ছে প্রচন্ড ভয় পেয়েছে সে। তুর্য পুনরায় হীর কে বুকে জড়িয়ে নেয়।
হীরের পিছু নেওয়া বখাটের দল তুর্য কে দেখে সেখান থেকে কেটে পরে। ভয়ার্ত হীর তুর্য কে আরও শক্ত করে চেপে ধরে। তুর্য কোনোমতে হীর কে শান্ত করে সেখান থেকে চলে আসে।
বাড়ি ফেরার পথে আমার মুখ দিয়ে আর একটি কথাও বের হয় নি। আজ যদি তুর্য ঠিক সময়ে এসে না পৌঁছাতেন? না, না! আর কিছু ভাবতে পারছি না। বাসায় রুমের ভিতর কেমন দমবন্ধ হয়ে আসছে। একটু ছাঁদে যাওয়া দরকার, বেশ কয়েকদিন খোলা বাতাসে নিশ্বাস নেওয়া হয় নি।
শীতকালের শেষ দিক। সহসাই মেঘের কোনো আনাগোনা নেই। রাতের অন্ধকার কে হালকা করে দিয়ে চারিদিকে চাঁদের আলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। ভরা চাঁদ।পূর্ণিমা তিথি চলছে। ঘনঘন হিমশীতল বাতাস ক্ষণে ক্ষণে গায়ে কাঁটা দিয়ে যাচ্ছে।বাতাসের ঝিরিঝিরি মিহি শব্দ কানে এক শ্রুতিমধুর গান শোনাচ্ছে। উদ্ভট সব চিন্তা ভাবনা দূর করতে চোখ বন্ধ করে পরিবেশটা অনুভব করছে হীর।
ভরা চাঁদের নীলাভ আলো তির্যক ভাবে হীর এর উপর কিরণ দিচ্ছে। ছলনাময়ী বাতাসের দল গুলো বারবার তার খোলা চুল গুলো উড়িয়ে দিচ্ছে। তুর্য মুগ্ধ হয়ে হীর এর দিকে তাকিয়ে আছে। এই সৌন্দর্য কে এড়িয়ে যাওয়া কোনো পুরুষের পক্ষে এতোটা সহজ নয়। এ যেনো প্রকৃতি আর সৌন্দর্যের রচয়িত কোনো মায়াজাল। অপরাধীর মতো তুর্যও সেই মায়াজালে আটকা পরে গিয়েছে। নিজের অজান্তেই তার প্রতিটি পদক্ষেপ তাকে হীর এর দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
আচমকা পিছন থেকে কেউ কোমর জড়িয়ে ধরে। কিঞ্চিত ভয় পেলেও পরক্ষণেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। কারণ এই স্পর্শ, এই ঘ্রাণ আমার পরিচিত। তুর্য জরিয়ে ধরে আছেন আমাকে। এই মানুষটার স্পর্শ আমার কাছে কখনও অপরিচিত হতে পারবে না।একটা সময় ছিল যখন এই মানুষটার একটা দৃষ্টির জন্য আকুল হয়ে অপেক্ষা করতাম। আজ সেই মানুষটা আমার নিশ্বাসের কাছে।
তুর্যর হাত দুটো আমার পেটে বিচরণ করছে। তার প্রতিটি স্পর্শ আমার মধ্যে এক নতুন শিহরণ জাগিয়ে তুলছে। খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে কি, আজ যদি আমি তুর্যর সাথে মিশে একাকার হয়ে যাই! হয়তো না!
কাঁধ থেকে চুল সরিয়ে তুর্য তার থুতুনি আমার কাঁধে রাখেন। তুর্যর গরম নিশ্বাস আমার কাঁধে আছড়ে পরছে। তুর্য বরাবরই তার ব্যবহারে আমাকে অবাক করেন। আজকেও তার ব্যতিক্রম কিছু হচ্ছে না। তুর্য তার ঠোঁট আমার ঘাড়ে স্পর্শ করালেন। কোনো এক স্বর্গীয় সুখের অনুভূতিতে লজ্জায় আমার দুই চোখ নুইয়ে আসছে। আজ আর তুর্য কে বাঁধা দিতে ইচ্ছে করছে না। কেনোনা তার ভালোবাসায় সাড়া দিয়ে আমিও প্রেমে যোগিনী হয়ে যাই!
শক্ত করে ধরে রেখেছেন তুর্য আমাকে। সেদিন জেসিকা কেও ঠিক এভাবেই ধরে রেখেছিলেন! জেসিকার কথা মনে পরতেই সেদিনের সেই হৃদয় বিদারক দৃশ্য একের পর এক চোখের সামনে এসে থমকে দাঁড়ায়। সেদিন জেসিকা তুর্যর বুকের সাথে এভাবেই লেপ্টে ছিল।
তুর্যর ঠোঁট ক্রমাগত আমার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে আসছে। কিন্তু এখন আর আমার মধ্যে ভালোবাসার কোনো অনুভূতি খুঁজে পাচ্ছি না। কেনো যেনো তার প্রতিটি স্পর্শ আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে। যার হাতে নিজেকে সমর্পণ করতে যাচ্ছিলাম সে তো বহু আগেই অন্য কারো কাছে সমর্পিত! শরীর যেনো আর কিছু বোধ পাচ্ছে না।
তুর্য হীর এর মুখ তার দুই হাতের আজলে নেওয়ার জন্য হাত বাড়ালে হীর তাকে সরিয়ে দেয়। হীর এর ব্যবহারে রাগ চিন চিনিয়ে মাথায় উঠে যায় তুর্যর। হীর এর সম্মতিতেই সে এগিয়েছিল, কিন্তু এখন হীর তাকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে। পুনরায় হীর এর থেকে রিজেকশন মানা তার পক্ষে সম্ভব নয়। রাগ সামলাতে না পেরে হাতের পাশে থাকা ফুলের টবে সজোরে ঘুষি মেরে ভেঙে ফেলে সে। ফুটন্ত লাভার মতো টগবগ করা রাগ কে কম করার বৃথা চেষ্টা করছে।
তুর্যর হাত কেঁটে অঝোরে রক্ত ঝরছে। কিন্তু সেদিকে হীর এর বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই। তার ধ্যান জ্ঞানে শুধু মাত্র তুর্য আর জেসিকার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের দৃশ্য গুলোই ঘুরপাক খাচ্ছে। নেশাগ্রস্তের মতো ঢুলু ঢুলু পায়ে সিড়ি বেয়ে নামতে নামতে তুর্যর রুমে যায়। মনের আকাশে কালো বাদল তান্ডব করছে। এদের শান্ত না করলে তার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে আর বাকি নেই। ওয়াশরুমের দরজা সজোরে বন্ধ করে শাওয়ার ছেড়ে দিয়ে হাঁটু গেড়ে নিচে বসে পরে।
বুক ভেঙে কান্না পাচ্ছে। হয়তো ওভার রিয়েক্ট করছি, কিন্তু তুর্যর বুকে অন্য কেউ থাকবে, সেই স্মৃতি কিভাবে ভুলে যাবো! বারবার যে সেই রাতের দেখা দৃশ্য চোখের সামনে এসে থমকে যাচ্ছে। তুর্য কে নিজের সবটুকু উজাড় করে ভালোবাসলেও দিন শেষে সে আমার নয়। সে যে অনেক আগেই অন্য কারো হয়ে গিয়েছেন। তুর্য কে নিজের করে পাওয়ার পর হারানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়!
.
রক্তে মাখানো হাতে অনবরত ওয়াশরুমের দরজা ধাক্কা দিয়ে চলছে তুর্য।
-- হীর ওপেন দ্য ডোর। আই ওয়ান্ট টু নো। আই নিড টু নো, হুয়াট হেপেন্ড টু ইউ?
ওপাশ থেকে হীর এর কোনো সাড়া ই সে পায় না।
-- ওপেন দ্য ব্লাডি ডোর ড্যাম ইট!
আজ সে হীর কে এভাবেই ছেড়ে দিতে পারবে না। আজ তার প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর তার চাই। যে করেই হোক আজ হীর কে জবাবদিহি করতেই হবে, কেনো সে বারবার তুর্য কে ফিরিয়ে দেয়। কি অপরাধ করেছে সে যার শাস্তি তাকে বারবার পেতে হচ্ছে।
-- হীর! দরজা খোলো বলছি! নয়তো আমি দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে যাবো।
এবারও ওপাশ টা নিশ্বব্দ।
-- ইউ নো মি হীর। আমি এতো সহজে হার মানার পাত্র নই। আজ যা কিছু হয়ে যাক। তবুও আমি জেনেই ছাড়বো তোমার কি হয়েছে! কেনো তুমি আমাকে মেনে নিতে পারছো না!
তুর্যর কোনো কথাই যেনো হীর এর কান অব্দি পৌঁছাতে পারছে না।
দরজায় ধাক্কা ক্রমশ অসহনীয় হয়ে উঠছে। হয়তো তুর্যর রাগের সামনে এই দরজাটাকেও হার মানতে হবে। দু কান চেপে ধরে তুর্যর ডাক অগ্রাহ্য করার হাজার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত তুর্যর জেদের কাছে হীর কে মাথা নত করতেই হলো। দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে আসে হীর।
পুরো শরীর ভিজে একাকার। কিছুক্ষণ আগে যেই চেহারার মায়ায় জড়িয়ে পরেছিল তুর্য সেই চেহারায় এখন বিষাদের ঘনঘটা।
এক মুহূর্তের জন্য তুর্যও কেঁপে উঠে হীর এর এই অবস্থায়। হীর কে এতোটা ভঙ্গুর সে একবারই দেখেছিল। তবে কি হীর এখনও তাকে বিশ্বাস করতে পারে নি! এখনও হীর এর দৃষ্টিতে তুর্য চরিত্রহীন পুরুষ!
এতোক্ষণ তুর্য হীর এর দুই বাহু চেপে ধরে ছিল। হীর এর শান্ত অথচ বিধ্বস্ত দৃষ্টি যেনো চিত্কার করে জানান দিচ্ছে সে তুর্য কে চায় না। হীর কে ছেড়ে দিয়ে গাড়ির চাবি নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায় তুর্য। হীর কে প্রশ্ন করার তার ইচ্ছা ইচ্ছাই থেকে যায়।
ভেজা কাপড় নিয়েই কাউচে শরীর এলিয়ে দেয় হীর। দু গাল বেয়ে অঝোরে অশ্রুদল গড়িয়ে পড়ছে। সারাদিনের ক্লান্তির পরেও আজ দুচোখের পাতা এক করতে পারছে না সে!
বেশকিছু ক্ষণ এলোপাথাড়ি ড্রাইভ করার পর একটা বারের সামনে এসে ব্রেক কষে তুর্য। অস্থির চিত্ত শান্ত করার জন্য এখন তার ড্রিংক করা প্রয়োজন। বারে গিয়ে একটা লার্জ প্যাগ অর্ডার করে সে। রাত প্রায় বারোটার উপরে বাজে। বারে লেইট নাইট শো হচ্ছে, যেখানে বেশ কয়েকজন সুন্দরী তরুণী তাদের নৃত্য কলা প্রদর্শন করছে। তাদের উদ্দেশ্য একটাই। কে কতো তাড়াতাড়ি খদ্দের কে লোভাতে পারে!
সারারাত তুর্য বাড়ি ফিরেন নি। কাল রাতে মনের অবস্থা ভালো না থাকায় আমিও আর তার খোঁজ করি নি। তবে এখন যখন হুশ ফিরে পেয়েছি তখন তার কথা খুব মনে পড়ছে। যতো যাই করে নেই,, তাকে ভালোবাসা বন্ধ করা সম্ভব নয়। শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত ভালোবেসে যাবো। এখনও কেনো বাড়ি ফিরেন নি উনি! অনেক খুঁজে মোবাইল ফোন টা বের করে তুর্যর নাম্বারে কল করলাম। নাম্বার টা নেটওয়ার্ক কভারেজ এরিয়ার বাইরে বলছে।
বেলা গড়িয়ে যাচ্ছে। তুর্যর বাড়ি ফেরার কোনো লক্ষণ না পেয়ে ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম ক্লাসে যাওয়ার জন্য। যেহেতু সারাজীবন একাই বাঁচতে হবে তাহলে শুধু শুধু অন্য কারো উপর নির্ভর হয়ে কি লাভ!
ড্রয়িং রুমে তাফসি আর রায়ান দাঁড়িয়ে আছে। রায়ানকে আবারও চৌধুরী মেনশনে দেখে অজানা একটা ভয় আবারও গ্রাস করে নিচ্ছে আমাকে। যতোবার রায়ান এ বাড়িতে আসে ততোবারই নতুন সমস্যা সৃষ্টি হয়।
বড় আম্মু আর তাফসি কে খুব খুশি মনে হচ্ছে।
হীর কে দেখে তাফসি একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে একটু এগিয়ে আসে।
-- হীর! এসেছিস তুই! দেখ কে এসেছে!
-- রায়ান আবার এখানে? তোমরা কিভাবে এলাও করলে?
-- যেভাবে তুই এখনও এই বাড়িতে আছিস!
-- তুমি এখনও আমাকেই ভুল বুঝছো।
-- ঠিক বলছিস। কারণ আসল কালপ্রিট তুইই।
-- অনেক বার নিজের সাফাই দিয়েছি। এখন সত্যি আমি খুব ক্লান্ত। তোমাদের যা ইচ্ছা ভাবতে পারো।Email
-- এতে এতো ভাবাভাবির কি আছে! এমনিতেই তোকে এই বাড়িতে খুব বেশি ইমপরট্যান্স কেউ দেয় না, তুর্য ছাড়া। তুর্য কেও যে তুই ফাঁসিয়েছিস এটা আমরা সবাই বিশ্বাস করি।
তাফসির কথার কোনো উত্তর না দিয়ে সেখান থেকে চলে যেতে নিলে রায়ান আমার পথ আটকে দাঁড়ায়।
-- খুশির খবর টা শুনে যাও!
প্রশ্নবিদ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি রায়ানের দিকে।
-- তাফসি কে আমি সব বলে দিয়েছি কিভাবে তুমি আমাকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে তাফসির থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলে!
-- আমি আপনাকে ফাঁসিয়েছিলাম!
-- আমি তখন তোমার আসল চেহারা টা দেখতে পারি নি। কিন্তু আজ যখন টাকার লোভে তুমি আমাকে ছেড়ে দিয়ে তুর্য কে বিয়ে করে নিলে,,, এখন আমার চোখে লাগানো তোমার ভালোবাসার পর্দা সরে গিয়েছে। আমি বুঝতে পেরেছি আমার জন্য একমাত্র তাফসির ভালোবাসাই নিখুঁত। তুমি যা করেছো সবটাই ছিল ছলনা।
-- চুপ করুন রায়ান। আপনার কি একটুও বিবেকে লাগছে না এসব মিথ্যে কথা রটাতে!
-- এনাফ হীর। তোমাকে আমি ভালোবেসেছিলাম। কিন্তু তুমি আমাকে ঠকিয়েছো। টাকার কাছে বিক্রি করে দিয়েছো নিজের ভালোবাসা, নিজের শরীর কে।
-- চুপ করুন। প্লিজ চুপ করুন। আমি আর নিতে পারছি না।
-- আমার বিছানায় আসার বিনিময়ে আমি তোমার সব প্রয়োজন মিটিয়েছি। এখন এটা তুর্য করছে। কে জানে আরও কতোজনে শয্যাসঙ্গী হয়েছো টাকার জন্য।
আর সহ্য করতে না পেরে সজোরে একটা চড় বসিয়ে দিলাম রায়ানের গালে। আজ আমার সহ্যের সীমা সত্যি ছাড়িয়ে গিয়েছে।
রায়ানকে চড় মারা তে তাফসি ভরকে উঠে।
-- হাউ ডেয়ার ইউ? তুই আমার হবু হাসবেন্ড এর গায়ে হাত তোলার সাহস পেলি কোথায়?
তাফসি রায়ানের থাপ্পড়ের প্রতিশোধ নিতে হীর কে চড় মারার জন্য হাত উঁচু করলে পাশে থেকে তুর্য তাকে ফেরায়।
-- হুয়াট আর ইউ ডুয়িং তাফসি? তুই কি ভুলে যাচ্ছিস হীর সম্পর্কে তোর বড় ভাইয়ের ওয়াইফ?
-- আমি এই ক্যারেকটারলেস মেয়ে টাকে আমার ভাবি কখনই মানতে পারবো না।
-- মুখ সামলে তাফসি। তোর মানা আর না মানায় সত্যি টা পাল্টে যাবে না। শি ইজ মাই ওয়াইফ নাও। লার্ন টু রেস্পেক্ট হার।
-- তুই এসব আমাকে বলছিস ভাইয়া? এই মেয়েটা এই বাড়ির হবু জামাই কে সবার সামনে অপমান করছে সেটা মুখ বুজে সহ্য করবো আমি? তুই যেমন তোর সো কল্ড বউ এর অপমান সহ্য করতে পারছিস না। ঠিক তেমনি আমিও আমার হাসবেন্ড এর অপমান সহ্য করতে পারবো না।
তুর্য আর দুজনেই তাফসির কথায় অবাক হয়।
-- এতো কিছুর পরেও তুই রায়ানকে বিয়ে করেছিস? (তুর্য)
-- আমি তোর মতো নই যে একা একাই বিয়ে করে নেবো। বাড়ির সবাই কে জানিয়ে সবার সম্মতিতে পরশু রায়ান আর আমি বিয়ে করছি।
তুর্য তাফসির কথার প্রেক্ষিতে আর কোনো কথা না বলে তার রুমে চলে যায়।
ভেবেছিলাম তুর্য তাফসিকে বোঝাবেন কিন্তু উনি কিছু না বলেই চলে গেলেন কেনো!


Post a Comment

0 Comments

Close Menu