লেখিকাঃ তানজিল মীম
ঋতুতে বর্ষাকাল! রেস্টুরেন্টে কালো শার্ট-প্যান্ট পরিধিত বসে আছে একজন যুবক। কফির কাপে চুমুক দিচ্ছে সে। মূলত একটা মেয়ের জন্য অপেক্ষা করছে নিশান্ত। মায়ের আদেশ আজ মেয়ে পছন্দ করতেই হবে। নিশান্ত বুুঝে না এই ত্রিশ বিশ মিনিটের মোলাকাতে কেউ কারো সারাজীবনের জীবনসঙ্গী হওয়ার যোগ্য কি না এটা বুঝে কেমন করে?' বাহিরে মুশুল ধারে বৃষ্টি হচ্ছে। নিশান্ত তার হাত ঘড়িটা দেখলো অনেক সময় পেরিয়ে গেছে মেয়েটা কি আসবে না তবে?' হঠাৎই রেস্টুরেন্টের দরজা খুলে কালো শাড়ি পড়া মুখে মাস্ক পরিধিত এক রমণী ঢুকলো খানিকটা ভিজে গেছে বোধহয়। রমণীটি ভিতরে ঢুকেই তার মুখের মাস্ক খুলে ফেললো। নিশান্ত দেখলো তা কোথাও গিয়ে কোনো এক মুগ্ধতা গ্রাস করলো তাকে।'
অন্যদিকে অবন্তী আশেপাশে তাকালো মা বলেছিল ছেলেটা নাকি কালো শার্ট পড়ে আসবে। অবন্তী আশেপাশে তাকাতেই নজরে আসলো তার, তার থেকে কয়েককদম দূরেই কালো শার্ট পরিধিত একটা ছেলের দিকে। অবন্তী আটপাঁচ কিছু না ভেবেই হুড়মুড়িয়ে এগিয়ে গেল নিশান্তের দিকে। বললো,
' আরিফ তো,
উত্তরে নিশান্ত কিছু বলার আগেই অবন্তী বসে পড়লো সামনের চেয়ারে। বললো,
' দেখুন আমি মটেও চাইনি আজ এখানে এইভাবে আসতে সহজভাবে বললে আমার এখন বিয়ে টিয়ে করার কোনোরকম ইচ্ছে নেই।'
নিশান্ত কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,
' বিয়ে না করার কারণটা কি জানতে পারি মিস?'.
' অবন্তী আমার নাম অবন্তী। নামও জানেন না অথচ মেয়ে দেখতে চলে আসলেন।'
' আমি আসলে,
' ওসব বাদ দিন দেখুন আমি এখন বিয়ে টিয়ে কিছু করতে পারবো না আপনি অন্যকাউকে দেখে নিন।'
' আমায় আপনার পছন্দ হয় নি?'
' দেখুন এটা পছন্দ অপছন্দের বিষয় নয় আমি আসলে এই মুহূর্তে বিয়ে করতে চাইছি না।'
' ওহ আচ্ছা। কফি খাবেন?'
খানিকটা অবাক হলো অবন্তী। বললো,
' মানে?'
' মানে কিছুই না আমরা কফি খেতে খেতে ঠান্ডা মাথায় কথা বলি।'
অবন্তী দম ফেললো। বললো, ' ঠিক আছে।' নিশান্ত ওয়েটারকে ডাকলো আরেককাপ কফি আনার অর্ডার দিলো। নিশান্তের কথা শুনে ওয়েটারও পাঁচ মিনিটের মতো অপেক্ষা করার কথা বলে চলে গেল। কফি তাদের রেডিই আছে শুধু নিয়ে আসলেই হলো। ওয়েটার যেতেই নিশান্ত তার নিজের কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে তাকালো সামনের মেয়েটার দিকে। অবন্তী তখন এদিক সেদিক তাকাচ্ছিল। বৃষ্টিতে খানিকটা ভিজে গেছে তার মুখমণ্ডল। অবন্তী টিস্যু দিয়ে তার মুখখানা মুছতে লাগলো। কালো শাড়ি, হাতে কালো চুড়ি, চুলগুলো খোঁপা করে ফুল লাগানো, মুখে খানিকটা বিরক্তির ছাপ। বোঝাই যাচ্ছে একদম অনিচ্ছাকৃতভাবে এখানে এসেছে। চোখে কাজল দেয়া, খুব বেশি ফর্সাও নয় আবার কালো নয়। উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ের রং খারাপ না। নিশান্তের ভালো লেগেছে। নিশান্তের ভাবনার মাঝেই ওয়েটার কফি নিয়ে হাজির। ওয়েটার অবন্তীর সামনে কফি রেখেই চলে গেল। লোকটা যেতেই অবন্তী পাঁচ মিনিটের মতো সময় নিয়ে কফির কাপে চুমুক দিলো। নিশান্ত দেখলো। দুই মিনিট যেতেই শান্ত গলায় বললো,
' এবার বলুন বিয়ে করতে চাইছেন না কেন?'
অবন্তী এবার তাকালো নিশান্তের দিকে। নিশান্তের চোখের দিকে তাকিয়েই বলে উঠল অবন্তী,
' আসলে আমি এখনই বিয়ে করতে চাচ্ছি না মিনিমাম দুই থেকে তিনবছর পর বিয়ে করতে চাচ্ছি।'
' শুধু এটাই কারণ নাকি অন্যকিছু আছে?'
নিশান্তের কথা শুনে খানিকটা অবাক স্বরে বললো অবন্তী,
' অন্যকিছু কি থাকবে?'
' না মানে ওই যে থাকে না বয়ফ্রেন্ড।'
' আপাতত নেই কিন্তু আপনি বিয়েতে হ্যাঁ বললে নিয়ে আসবো।'
চমকে উঠলো নিশান্ত কি সাংঘাতিক কথা? নিশান্ত কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,
' আচ্ছা বুঝলাম। কিন্তু আমার তো আপনায় পছন্দ হয়েছে এখন কি করবো?'
অবন্তী অনেকক্ষণ চুপ থেকে বললো,
' দেখুন আমি মানুষটা বড্ডই অগোছালো।'
' তাতে কি আমি গুছিয়ে নিবো।'
' আমি রান্নাবান্না কিছুই পারি না।'
' সমস্যা নেই ধীরে ধীরে শিখে নিবেন বাড়িতে মা আছে, মোবাইলে ইউটিউব আছে দেখে দেখে শিখে নিবেন।'
' আপনি বিষয়টা বুঝচ্ছেন না।'
' আপনি বুঝিয়ে বলুন তবে।'
বলেই হাল্কা হাসে নিশান্ত। এতে খানিকটা বিভ্রান্ত ফিল করলেও নিজেকে সামলে নেয় অবন্তী। জোরে নিশ্বাস ফেলে বলে,
' ধরুন আপনি সারাদিন কাজ করে বাড়ি ফিরলেন আপনি খুবই ক্লান্ত আপনার অত্যাধিক হারে বিশ্রামের প্রয়োজন। এমন অবস্থায় আপনি রুমে ঢুকে দেখলেন আপনার রুমটা বড্ডই অগোছালো, ঘরের জিনিসপত্র এদিক সেদিক ছড়ানো ছিটানো এগুলো কি আপনার ভালো লাগবে? রাগ উঠবে না।'
অবন্তীর কথা শুনে নিশান্ত না চাইতেও হেঁসে ফেলে। যা দেখে অবন্তী বলে,
' কি হলো আপনি হাসছেন কেন?'
নিশান্ত তার হাসি থামায়। বলে,
' সরি। যাইহোক সিরিয়াসভাবে বলি আপনি তো জানেন আমার ভালো লাগবে না তাহলে গুছিয়ে রাখবেন না।'
' আপনায় তো বলেছি আমি একজন অগোছালো মানুষ।'
' বুঝলাম।'
' আচ্ছা এটা বাদ দিন ধরুন একদিন অফিস থেকে আসলেন আপনার প্রচুর ক্ষুধা লেগেছে,,
অবন্তীর পুরো কথা শেষ হওয়ার আগেই নিশান্ত বলে উঠল,
' কিন্তু এসে দেখলাম আপনি রান্না করেন নি।'
' না।'
' তাহলে?'
' রান্না তো করেছি কিন্তু রান্না খুবই বাজে হয়েছে মুখে দেয়ার মতো না আপনার রাগ উঠবে না।'
' ওসব দিন আমি না হয় রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার নিয়ে আসবো। আর তাছাড়া আজকের রান্না খারাপ হলে কালকের রান্নাও যে খারাপ হবে এমন তো নয়। এখন আপনি ইচ্ছে করে খারাপ করলে কি আর করার?'
' আপনি মানতে কেন চাইছেন না বলুন?'
' আপনার কথাগুলো মানার মতোই নয়।'
' দেখুন আপনি বিয়েতে হাজার বার রাজি হলেও আমি রাজি নই বিয়ের দিনই আমি বাসা থেকে পালিয়ে যাবো।'
' বাপ রে সাংঘাতিক ভয় পেলাম তো।'
অবন্তী জবাব দিলো না। ছেলেটা কেমন যেন তার কথাগুলোর ঠিকভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে না। এমন সময় সেখানে উপস্থিত হলো চুড়িদার পড়া একটি মেয়ে। নিশান্তকে দেখিয়ে বললো,
' নিশান্ত তো?'
নিশান্ত তাকালো মেয়েটার দিকে। বললো,
' জি।'
' আমি মুনমুন।'
এবার যেন অবন্তী অবাক হলো। এই ছেলেটার নাম নিশান্ত আরিফ নয়। অবন্তী অবাক দৃষ্টিতে নিশান্তের দিকে তাকিয়ে বললো,
' আপনার নাম নিশান্ত আরিফ নয়।'
এরই মাঝে কালো কোট প্যান্ট শার্ট পড়ে হাজির হলো আরিফ। অবন্তীকে দেখেই বললো,
' আপনার নাম অবন্তী না।'
এবার অবন্তী তাকালো আরিফের দিকে। এসব হচ্ছেটা কি? অবন্তী উঠে দাঁড়ালো হতভম্ব হয়ে বললো,
' আপনি আরিফ।'
' জি।'
' তাহলে উনি কে?'
অবন্তী তাকালো নিশান্তের দিকে। বললো,
' আপনি যে আরিফ নন তা এতক্ষণ বলেননি কেন?'
' আপনার কোথাও একটা মিস্টেক হচ্ছে আমার পুরো নাম আরিফুল মাহামুদ নিশান্ত। অনেকে আরিফ বলে ডাকে। তাই ভাবলাম আর আমিও একটা মেয়ের সাথে মিট করতে এসেছিলাম তাই হয়তো।'
অবন্তী কিছু বললো না। ভিতরে ভিতরে প্রচুর রাগ উঠলো তার ছেলেটা তো চরম বদমাশ। অবন্তীর ভাবনার মাঝেই আরিফ বললো,
' আমরা ঐদিকটা গিয়ে কথা বলি অবন্তী।'
উত্তরে নিশান্তের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়েই বললো অবন্তী,
' হুম চলুন।'
চলে গেল অবন্তী আর আরিফ। নিশান্ত মনে মনে হাসলো প্রচুর।ওরা যেতেই মুনমুন বসলো নিশান্তের সামনে। বললো,
' আই এক্সট্রিমলি সরি এতক্ষণ লেট করার জন্য আসলে বৃষ্টি পড়ছিল তারওপর জ্যাম।'
' ইট'স ওকে। কফি?'
মাথা নাড়ায় মুনমুন। নিশান্ত আবার ডাকে ওয়েটারকে।'
এদিকে,
ভিতরে ভিতরে চরমভাবে রেগে গেল অবন্তী তারই ভুল হয়েছে মায়ের সাথে রাগ দেখিয়ে এই আরিফের ছবি না দেখেই চলে আসা। অবন্তী তাকালো আরিফের দিকে। সহজভাবে বললো,
' দেখুন আমি এখন বিয়ে টিয়ে কিছু করবো না শুধুমাত্র মায়ের জন্য এখানে এসেছি?'
অবন্তীর কথা শুনে আরিফ এতটুকু বলে শুধু,
' বিয়ে না করার কারণটা কি বলা যায় অবন্তী?'
জবাব দেয় না অবন্তী খুব তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে নিশান্তের দিকে। নিশান্তও দেখে তাকে মাঝে দুই একগাল মিষ্টি হাসি উপহার দেয়। যেটা অবন্তীর সবচেয়ে বিরক্ত লাগে।'
-----
মাঝখানে কেটে গেল একমাস। অবন্তীর বিয়ে হয় নি আরিফের সাথে অবন্তী যা বলেছে তা আরিফের পছন্দ হয় নি তাই সে বিয়েটা ভেঙে দিয়েছে। অবন্তীর এসবে আফসোস নেই বরং ভালোই হয়েছে। অর্নাস সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্রী অবন্তী তার ইচ্ছে পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করা। তবে চাকরিটা তার ফ্যামিলির কেউ করতে দিবে না তবুও অবন্তী চায় দু'বছর পর্যন্ত সে সিঙ্গেল থাকুক। বিয়েটিয়ে নয় তার ভার্সিটি লাইফ, বন্ধুবান্ধব হাসি তামাশা এসব নিয়েই কাটুক দু'বছর তারপর না হয় বিয়ে টিয়ে করে স্বামী সংসার গড়বে কিন্তু না তার ফ্যামিলি তা হতে দিবে না কতক্ষণে বাড়ি থেকে বের করবে তার ধান্দায় আছে। অবন্তী জোরে নিশ্বাস ফেললো এই নিয়ে পঞ্চমবারের মতো বিয়ে ভাঙলো অবন্তী। অবন্তীর ফোন বাজলো। আননোন নাম্বার। অবন্তী কিছুক্ষণ নাম্বারটার দিকে তাকিয়ে থেকে ফোনটা তুললো। সালাম দিয়ে বললো,
' কে বলছেন?'
অপরপ্রান্তে থাকা ব্যক্তিটিও সালামের জবাব দিয়ে বললো,
' আমি বলছি,
' অদ্ভুত তো। আমি মানে?'
' নিশান্ত।'
সঙ্গে সঙ্গে হোটচ খেল অবন্তী। অবাক হয়ে বললো,
' আপনি, আপনি আমার নাম্বার পেলেন কোথায়?'
' মানুষ চাইলে আকাশের চাঁদটাও খুঁজে ধরতে পারে আর আমি তো সামান্য একটা নাম্বার খুঁজেছি না পাওয়ার তো কোনো কারণ দেখছি না।'
বিরক্ত হলো অবন্তী। বললো,
' ফোন কেন দিয়েছেন তাই বলুন?'
' অগোছালো মানুষটার একটু খোঁজ নিতে।'
' মসকারা করছেন আমার সাথে?'
' অবশ্যই না।'
' ফোন রাখছি আমি।'
' প্লিজ রাখবেন না।'
অবন্তী শুনলো কাটতে গিয়েও কাটলো না। বললো,
' কি বলবেন দ্রুত বলুন?'
নিশান্ত অনেকক্ষণ চুপ থাকলো। শুধুমাত্র তার নিশ্বাসের শব্দ ছাড়া আর কিছুই শোনা যাচ্ছে না। অবন্তী অনেকক্ষণ সেই নিশান্তের নিশ্বাসের শব্দ শুনলো তার কি ভালো লাগছে? কেমন একটা অনুভূতি হচ্ছে অবন্তীর। অবন্তী অনেকক্ষণ চুপ থেকেই বললো,
' কি হলো আপনি কিছু বলছেন না কেন?'
নিশান্ত এবার মুখ খুললো। বললো,
' কাল একবার দেখা করবেন প্লিজ আপনায় কিছু বলার আছে?'
' আমি কেন যাবো বলুন তো।'
' আমি খুব অপরিচিত তো নই আসাই যায়।'
' না যায় না।'
' আমি জানি আপনি আসবেন।'
' আমি আসবো না।
' আপনি আসবেন ওই রেস্টুরেন্টটাতেই আসবেন কিন্তু।'
' যদি না আসি?'
' আমি জানি আপনি আসবেন।'
ফোন কাটলো নিশান্ত। আর নিশান্তের কাজে অবন্তী হেঁসে ফেললো। বললো,
' ছেলেটা একটা পাগল তো।'
------
পরেরদিন বিকেলবেলা। সেই রেস্টুরেন্টে বসে আছে নিশান্ত। খুবই এক্সাইটেড সে। টোটাল কথা তার জীবনসঙ্গী হিসেবে অবন্তীকেই চাই। এক ঝলকের কথা মাঝে কি এমন যাদু ছিল জানে না নিশান্ত। মেয়েটা আসবে তো। নিশান্তের এসব ভাবনার মাঝেই হাজির হলো অবন্তী পড়নে তার মেরুন রঙের চুড়িদার। আজ খোলা চুলে এসেছে মেয়েটা। নিশান্ত মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে রইলো অবন্তীর দিকে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো আপনাআপনি। অবন্তী দেখলো তা ভিতরে ভিতরে হাসি পেলেও হাসলো না। অবন্তী সোজা গিয়ে বসে পড়লো নিশান্তের সামনের চেয়ারটায়। বললো,
' কি বলবেন বলুন? আমি কিন্তু বেশিক্ষণ বসবো না।'
নিশান্ত বসলো। নীরবে বললো,
' কফি?'
' না পরে আগে বলুন কি বলবেন?'
নিশান্ত অনেকক্ষণ সময় নিয়ে বললো,
' আমায় বিয়ে করবেন?'
অবন্তী অবাক হলো না সে যেন বুঝেছিল নিশান্ত এমন কিছু বলার জন্যই তাকে ডেকেছে। অবন্তী একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো,
' কেন মুনমুনের কি হলো?'
' কেন আপনি জানেন না ওর তো বিয়ে হয়ে গেছে আরিফের সাথে।'
' কোন আরিফ?'
' ওই যে আপনার সাথে দেখা করতে আসা আরিফ। ওরা আসলে ওইদিন একসাথেই রেস্টুরেন্টে এসেছিল একই অটোতে তখনই একে অপরকে ভালো লাগে। ওই আমাদের মতো আর কি?'
অবন্তী অবাক স্বরে বললো,
' আমাদের মতো মানে?'
' আপনি কিন্তু জানেন আমি কি বোঝাতে চাইছি।'
অবন্তী হাসে। অবন্তীর এই হাসিটা যেন অনেককিছু বলে দিল নিশান্তকে। অবন্তী তার হাসি থামিয়ে বললো,
' এবার কি চাইছেন বলুন?'
' বিয়েটা করে ফেললে হয় না।'
' আপনায় তো বলেছিলাম আমি এখন বিয়ে করবো না দু'বছর পর করবো।'
' সমস্যা নেই আমরা দু'বছর পরই বিয়ে করবো। ততদিন না হয় গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড হয়ে থাকি। না বাড়ির সবাইকে জানিয়ে সরাকাবিন করে রাখি। তারপর না হয় দু'বছর পর থেকে একসাথে থাকবো। প্লিজ প্লিজ মানা করবেন না।'
নিশান্তের পাগলামিতে অবন্তী হেসে বলে,
' আমার মাঝে কি এমন দেখলেন বলুন তো আমি তো আপনায় বলেছি আমি মানুষটা বড্ড অগোছালো।'
অবন্তীর কথার পিঠে কথার উত্তরে বললো নিশান্ত,
' আপনি কেন বুঝতে চাইছেন না আমার যে 'অগোছালো তুমি'টাকেই পছন্দ।'
নিশান্তের এতটুকু কথার মাঝে কি এমন মুগ্ধতা ছিল জানে না অবন্তী। মিষ্টি হেসে বলে,
' আমি নিজেকে গুছিয়ে নিবো।'
' তবুও মাঝে মাঝে অগোছালো হয়েই কথা বলবেন।'
হাসে অবন্তী। বলে,
' বাড়িতে কি আজই জানাবেন?'
' তুমি বললে এক্ষুনি ওয়াশরুমে গিয়ে ফোন করে বলবো।'
উচ্চস্বরে হাসে অবন্তী। বলে,
' আপনি একটা পাগল।'
' জানি তো আমার 'অগোছালো তুমি'টা করেছে।'
' ভালোবাসেন আমায়?'
' খুব।'
' ঠিক আছে দু'বছর অপেক্ষায় থাকুন বিয়ে আমি আপনাকেই করবো।'
নিশান্ত খুশি হলো। বললো,
' এবার তবে ওয়েটার ডাকি।'
মাথা নাড়ায় অবন্তী যার অর্থ হ্যাঁ। অবন্তীর উত্তর পেতেই নিশান্ত ডাকলো ওয়েটারকে। বললো,
' ওয়েটার দু'কাপ কফি।'
0 Comments