Ad Code

প্রেমবাণী (সিজন ১) পর্ব ৭

লেখিকাঃ ফাতেহাতুন নিলা

 **********

মেহরাবদের গাড়িটি একটি শপিংমলের সামনে এসে থামে।তাদের পিছনে সাইফের গাড়ি।গাড়ি থেকে একে একে সবাই নেমে পড়ে। একসাথে জড়ো হয়ে শপিংমলের ভিতরে যাওয়া শুরু করে।
' যার যা পছন্দ কেনাকাটা করো।কেনাকাটা শেষ হবার পর সোজা এই দোকানের সামনে থাকবে। ( হাত দিয়ে সামনে থাকা দোকানটিকে দেখিয়ে)। এদিক সেদিক গেলে পা ভেঙে দিব মনে রেখ।তোমাদের হাতে দুই ঘন্টা সময়। এই দুই ঘন্টার মধ্যে কেনাকাটা শেষ করবে। '
'আপনারা কি যাবেন না আমাদের সাথে '।
মেঘলার কথার পৃষ্টে সায়ান তার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ মেরে বলে,' তোমাদের মেয়েলি জিনিস কেনা কাটা কি আমাদের দেখাতে চাও মেঘু রাণী। আমি কিন্তু এক পায়ে রাজি। '
সায়ানের এমন উওর শুনার জন্য উপস্থিত থাকা কেও প্রস্তুত ছিল না। গুল গুল চোখ করে সবাই সায়ানের দিকে তাকিয়ে আছে। সবাই একসাথে তাকানো দেখে সায়ান বলে,' আমি সুন্দর এটা জানি তাই বলে এভাবে দেখার কিছু নেই'।কথাটি বলেই একটু ভাব নিয়ে দাঁড়ায় সায়ান।
' ভাইয়া আমরা আপনাকে দেখছি না। আসলে বুঝতে চাইছি আপনি একটু আগে কি বলেছিলেন। '
নিদ্রিতার কথায় মেহরাব বলল,' তোমাদের শপিং করার সময় কিন্তু শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর মেঘলা তোমরা তোমাদের মতো শপিং করো। আমরা ছেলেরা আলাদা ভাবে করছি।সবার শেষ হলে এখানে এসে থাকবে। একসাথে যাব।
' আচ্ছা 'বলেই মেঘলারা সবাই একসাথে যাবার জন্য পা বাড়ায়।
" আমি তোমাদের সাথে যাব না। মেহরাবের সাথে থাকব।"
হুট করে শ্রেয়ার এমন কথা শুনেই দুইজনের পা জোড়া থেমে যায়।শ্রেয়ার দিকে সায়ান যখন কিছু বলতে যাবে তখন মেহরাব তাকে ইশারা দিয়ে থামিয়ে দেই।
"আমার সাথে থেকে কি কাজ তোমার শ্রেয়া? "
"আমার কিছু কিনা কাটার প্রয়োজন নেই তাই তোমার সাথে থাকব। "
"তোমার কিছু নাও কিনার থাকতে পারে আপু কিন্তু আমাদের তো আছে তাই না। আমাদের সাথে চলো একটু সাহায্য করবে। তোমার চয়েস তো সেই আপি।"
"নিদ্রিতা কিন্তু ঠিকি বলেছে শ্রেয়া তুমি বরং ওদের সাহায্য কর। এখানে তুমি মেহরাবের সাথে চাইলেও থাকতে পারবে না। ওর সাথে আমি আছি। তোমার সহজ সরল অতি ভদ্র ভাই সাইফ আছে। এতগুলো ছেলের সাথে থাকা চাইতে ওদের সাথে যাও। ছোট বোনদের একটু দেখে রাখবে। "
" সায়ান ভাইয়া কিন্তু ঠিকি বলেছে শ্রেয়া আপু আমাদের সাথে চলো। "
মেঘলার কথা শুনে সায়ান বিড়বিড় করে বলে,
" দেখেছো, সাধে কি আর বজ্জাত মেয়ে বলি। বলেছি যেন ভাই না ডাকতে। তারপরেও এই মেয়ে ভাই বলে আমার হৃৎপিণ্ডটাকে ভেঙে গুঁড়াগুঁড়া করে দেয়।"
এদিকে সায়ানদের কথোপকথনের মাঝে মেহরাব দূরে থাকা একজন কালো পোশাক পড়া ব্যক্তিকে চোখ দিয়ে কিছু একটা ইশারা করেই বাঁকা হাসি দেয়।মেহরাব ইশারা দেওয়ার সাথে সাথেই শ্রেয়ার ফোনে একটি কল আসে।শ্রেয়ার ফোনে এমন সময় হুট করে কল আাসায় বিরক্ত নিয়ে তাকাই ফোনের স্কিনে। স্কিনে ভেসে থাকা নাম্বারটা দেখেই শ্রেয়া এক পলক সবার দিকে তাকিয়ে বলে,"তোমরা যাও আমি আসছি। " বলেই শ্রেয়া হনহন করে চলে যায়। শ্রেয়া চলে যেতেই মেহরাব নিদ্রিতাদের উদ্দেশ্য করে বলে," তোমরা দাঁড়িয়ে না থেকে নিজেদের কাজে যাও"
মেহরাবের কথায় দুইজন চলে যায়।
মেঘলারা সামনে চলে যাবার পরেই সাইফ বলে ওঠে, "ভাই আমি যায় ওদের সাথে। আমার কিছু.... " সাইফকে সম্পূর্ণ কথা শেষ করতে না দিয়ে সায়ান সাইফের কাঁধ ধরে টেনে কাছে এনে কাঁধের মধ্যে চাপড় মেরে বলে,
"কিছুক্ষন আগে তুমি কোথায় ছিলে ছোট ভাই। মেহরাব কি বলল শুনতে পাওনি, হুম।"
এক ব্রু উঁচিয়ে জিজ্ঞাসা করে সাইফকে।
"আসলে ভাই আমিও কয়েকটা শাড়ি কিনতাম"
"কার জন্য? " প্রশ্ন করে মেহরাব।
" আসলে মেহরাব ভাই আপনার.."
" একটা কথা বলতে গিয়ে এত লাল হয়ে যাচ্ছ কেন ছোট ভাই? মতলব টা কিন্তু ভালো ঠেকছে না। "
সায়ানের কথায় লাজুক হেসে বলে,
" আমি নিদ্রিতাদের কে কিছু ড্রেস কিনে দিতে চাই।"
"নিদ্রিতাদের নাকি শুধু নিদ্রিতাকে।"
প্রশ্নটি করেই মেহরাব সাইফের সামনে এসে কাঁধে হাত রেখে বলে, " নিদ্রিতার থেকে দূরে দূরে থাকবে সাইফ। নয়তো নিদ্রিতার প্রিয় প্রেমিক পুরুষ তোমাকে সোজা ওপরে পাঠিয়ে দিবে তাও বিনা টিকেটে। এবার চলো আমাদের সাথে। "
" নিদ্রিতার প্রেমিক...."
" হুস কোন প্রশ্ন নই সোজা চলো এখন। প্রেমিক পুরুষ কে তা সময় হলে জানতে পারবে। "
কথাটি বলেই মেহরাব হাঁটা শুরু করে তার সাথে সায়ান ও। পিছনে পিছনে সাইফ আসছে। তবে মাথার মধ্যে এক ঝাঁক প্রশ্ন নিয়ে।
"কিছু বলবে মামি মা। এত রাতে যে এখানে। " বলল নিদ্রিতা।
" কেন এত রাতে আসা কি নিষেধ আমার মেয়েটার কাছে।"
" না মামিমা তেমন নই, কিছু বলবে।"
"হুম" তুই কি আমার ছেলে মেহরাবকে ভালোবাসিস নিদ্রিতা? "
হুট করে মুনিরা চৌধুরীর এমন প্রশ্নে নিদ্রিতা অনেকটা অবাক হয়ে যায়।সাথে ভয়ে কেপে ওঠে। নিদ্রিতাকে চুপ থাকতে দেখে মুনিরা চৌধুরী পুনরায় বলেন," আমি কিছু জানতে চাচ্ছি নিদ্রিতা। "
"হুট করে এমন প্রশ্ন কেন মামিমা?"
"আমি যেটা বলেছি তার উওর দেও নিদ্রিতা।"
" হ্যাঁ,আমি ভালোবাসি মেহরাব ভাইকে। কিন্তু এই ভালোবাসার কোনো মূল্য নেই মামিমা। মেহরাব ভাই তো আর আমাকে ভালোবাসে না। " কথাগুলো বলতে বলতেই নিদ্রিতার দুই চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে।



Post a Comment

0 Comments

Close Menu