Ad Code

বর্ষণ বিলাস পর্ব - ১

লেখিকাঃ তাহিনা আইরাত ইরা

 ❝তাকে অল্প কাছে ডাকছি

আর আগলে আগলে রাখছি
তবু অল্পেই হারাচ্ছি আবার..❞
গানের লাইন গুলো উচ্চারণ করতেই হাতের গিটার টা মেঝেতে ছুড়ে ফেলে দেয় উষ্ণ। অজানা কষ্টে ডুকরে কেঁদে ওঠে। হটাৎই বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। টিনের চালে বৃষ্টির রিনিঝিনি শব্দের সাথে উষ্ণের চাপা আর্তনাদ কম ভয়ানক মনে হচ্ছিল না।
_________Facebook
সরু পিচের রাস্তায় হেটে যাচ্ছে উষ্ণ। গ্রীষ্মের উত্তপ্ত রোদে ঘেমে একাকার। আজ বৃহস্পতিবার। দুটো টিউশনি আছে। বেশি চাপ নেই। গন্তব্য বেশি দূর না। তবুও ধরনীর এরুপ রুদ্রমূর্তি ধারণ করায় ঘেমে যাচ্ছেতা-ই অবস্থা। শেষমেশ এতোসব উপেক্ষা করে গন্তব্যে এসে থামে সে। সামনে লম্বা এক বাড়ি।
সকাল হতেই তৈরি হয়ে পড়ার টেবিলে বসে আছে তটিনী। বই হাতে নিয়ে ঝিমুচ্ছে। মূলত মায়ের বকা খাওয়ার ভয়েই এই সাত-সকালে নিজের মহামূল্যবান ঘুম বাদ দিয়ে পড়ার টেবিলে বই নিয়ে বসে আছে।
“তটিনী, তোর স্যার এসেছে।”
মায়ের এভাবে হুট করে ডাকায় চমকে ওঠে সে। এভাবে হুট করে ওঠায় প্রথমে তার মস্তিষ্ক চলাচল না করলেও পরে যখন বুঝতে পারে, তার মাথায় রক্ত উঠে আসে। মনে মনে হাজার টা গালি দেয় উষ্ণ কে। কী দরকার ছিল,, এতো সকালে পড়াতে আসার। তটিনীর ভাবনার মাঝেই কক্ষে প্রবেশ করে উষ্ণ।
“এতো মন দিয়ে যদি একটু পড়াশোনা টা করতে তাহলেও একটু কাজে দিতো।”
উষ্ণের বলা কথা কর্ণকুহর হতেই আবারো চমকে ওঠে তটিনী। সে ফ্যালফ্যাল করে উষ্ণের দিকে তাকিয়ে থাকে আর মনে মনে গালি দিতে থাকে।
“আমাকে গালি দেওয়া শেষ হলে এবার বই টা বের করো।”
তটিনী অবাক হয়। উষ্ণ কীভাবে বুঝলো যে সে তাকে গালি দিচ্ছিল?
“এতো না ভেবে বইটা দাও।”
“দিচ্ছি স্যার।”
উষ্ণ বহুল মনোযোগ সহকারে তটিনী কে পড়া বুঝিয়ে দিয়ে থাকে। কিন্তু তটিনীর?সে তো এক ধ্যানে তার স্যার কে দেখে যাচ্ছে। তটিনী মাঝে মাঝে ভেবে পায় না তার উষ্ণ স্যারের মধ্যে কী আছে? অন্যদের সামনে তার নামে হাজারো বদনাম করে যায় আর সামনে পেলে ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে থাকে।
“এভাবে কী দেখছো?”
“জানিনা।”
“তাহলে দেখছো কেন?”
তটিনী উষ্ণের দিকে কয়েক সেকেন্ড সন্দেহের দৃষ্টি তে তাকায়। তারপর আবার ঠোঁট উলটে বলে,
“আপনি এতো সকাল বেলা কেন পড়াতে আসেন স্যার?”
উষ্ণ তটিনীর দিকে বিরক্তের সহিত তাকায়। এই মেয়েটা একটু বেশি কথা বলে। তাও সব যুক্তিহীন কথাবার্তা। মুখে বিরক্তি ভাব নিয়েই উষ্ণ উত্তর দেয়,
“যাতে সকাল বেলা তোমার ঘুম ভাঙাতে পারি তাই।”
উষ্ণের কথা টা শোনা মাত্রই তটিনী নাক মুখ কুচকে ফেলে।
“তুমি কী পড়বে নাকি আমি চলে যাবো?”
তটিনী মুখ গোমড়া করে বলে,
“হ্যাঁ স্যার, পড়ান আপনি।”
তটিনীর কথায় উষ্ণ স্বাভাবিক ভঙিতে পড়িয়ে চলে যায়। সে যেতেই তটিনী চেয়ারের সাথে হেলান দিয়ে বসে। উষ্ণ তাকে এই দুই মাস যাবত পড়াচ্ছে। তবে উষ্ণের সম্মুখে থাকলে তার এমন লাগে কেন? অন্যদের কাছে সে যতই উষ্ণের নামে বদনাম করুক, অন্য কেউ কিছু বললে তার ভালো লাগে না। উষ্ণ সামনে থাকলে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে। তার ব্যাপারে ভাবতে ভালো লাগে। ষোড়শীর এরুপ অনুভুতির কারণ কী?কী আছে এই শ্যামবর্ণ পুরুষটির ভিতরে?
বান্ধবী কাছে শুনেছিলো প্রেমে পড়লে এমন হয়,,তবে সে ও কী তার উষ্ণ স্যারের প্রেমে পড়েছে?


Post a Comment

0 Comments

Close Menu