Ad Code

আমার ভাই শ্রেষ্ঠ ভাই

লেখিকাঃ তানজিল মীম

বৃষ্টিমাখা নির্জন বিকেলে স্যাঁত স্যাঁতে মাটির গন্ধে নিজ কক্ষের টেবিলে বসে বই লিখছিলেন লেখক আনিসুল রহমান। তার ষাট বছরের জীবনে তিনি এখনও বিয়ে করেন নি। এর একমাত্র কারণ তার ছোট ভাইবোন। ছোটবেলায় ট্রাকে চাপা পড়ে মারা গেলেন আনিসুল রহমানের বাবা-মা। বয়স তখন সবে পনের। ছোট ভাইবোন দু'জন খুব ছোট। রেনু তো হাঁটতেও পারতো না। আনিসুল রহমানের নিজ ছোট বেলার 'সোনালি সকাল' নামে তার জীবনকাহিনী লিখছেন। হঠাৎ দরজায় কঠিন আওয়াজে কড়া আঘাত পড়লো। আনিসুল রহমান নিজের লেখা থামিয়ে মৃদুস্বরে জিজ্ঞেস করলেন,“কে?”

Facebook

কণ্ঠ শোনা গেল না। তবে দরজায় আঘাত পড়লো আবার। তিনি চেয়ার ছেড়ে উঠে এলেন। চোখের চশমাটা হাল্কা নাড়িয়ে দরজা খুলে চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই মুহূর্তের মধ্যে গুলির অনবরত আঘাতে ঝাঝড়া হল আনিসুল রহমানের বুক। সাদা পাঞ্জাবি লেপ্টে চুইয়ে চুইয়ে গড়িয়ে পড়ল রক্ত। তিনি শুধু চেয়ে রইলেন। আগন্তুক চলে গেল। বৃষ্টির শব্দে কেমন নিস্তব্ধতায় ভরপুর চারপাশ। আনিসুলের বাড়িটা ছিল জঙ্গলের ভেতর দিয়ে। তিনি একাই থাকতেন সেখানে। আনিসুল রহমানের লাশ পাওয়া গেল দু'দিন পর। পুলিশ তদন্ত করে জানলো আনিসুল রহমানকে খুন করেছে তারই ছোট ভাই মির্জা রহমান। কারণ ছিল ভাইয়ের সম্পত্তি আর লেখকনামার খ্যাতি। আশপাশের মানুষ কাহিনি শুনে থমকে গেলেন। ছোট বোনও অশেষ কাঁদলো। আনিসুল রহমানের টেবিল ছুঁয়ে থাকা সাদা পৃষ্ঠায় লেখা সোনালি সকাল বাতাসের ধাক্কায় গড়িয়ে পড়ল নিচে। যেখানে শেষ লাইনের তিনি লিখেছিলেন,“আমার ভাই শ্রেষ্ঠ ভাই। আমার ভাইয়ের মতো মানুষ জগতে হয় না।” সত্যি বোধহয় হয় না।’
~ সমাপ্ত...

Post a Comment

0 Comments

Close Menu