Ad Code

আত্মহত্যার নেপথ্যে পর্ব ৭

লেখিকাঃ সাদিয়া আকতার

রবিনের উত্তর কি ছিলো শোনা যায় না কিন্তু রবিন হয়ত বিশেষ কোন তথ্য দিয়েছে যারফলে আলভি'র হাসি মাখা মুখ টা ভীষণ রকমের গম্ভীর হয়ে যায়।

কিছুক্ষণ নিরব থেকে আলভি পুনরায় বলে " তুমি এখনই শান্তানু কে আবার ডাকবে.... যেকোনো ভাবে ওই অ্যাপ ওপেন হওয়া চাইই.....আমি কোন এক্সকিউজ শুনতে চাই না... " কল কেটে দিয়ে আলভি আবার কেসের ঘটনার ছকে চোখ বুলাচ্ছিলো কিছু একটা নজর কাড়ে। তড়িঘড়ি রবিন কে মেসেজ দিয়ে একটা ইনফরমেশন বের করতে বলে।

আপন মনে রুমে পায়চারি করছে আলভি। এখন অপেক্ষা করা ছাড়া কোন উপায় নেই। হাফ ডিউটি শেষে দুপুরে বাড়িতে আসেন ইন্সপেক্টর সামস। এসেই সোজা চলে গেলেন গোয়েন্দা আলভি'র কক্ষে। তিনি নিজেও হয়ত থানায় কাজে মনোযোগ দিতে পারেন নি, এই কেসের তদন্তে নিয়ে তার মধ্যেও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

Facebook

: কি হে গোয়েন্দা সাহেব!!..... কি এত ভাবছেন??...

: হুম্মম্ম.... কিছু অসামঞ্জস্য দেখতে পাচ্ছি... হয়ত ডাকাতি'র পরে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যাবে.....

: দোহাই!!.... আমি পুলিশ মানুষ!!.... এসবের কি দরকার!!.... সার্চ ওয়ারেন্ট....

: যতটুকু বুঝেছি এখানে লম্বা হাত ওয়ালা লোক আছে.... ওয়ারেন্ট নিয়ে যাওয়ার আগেই সবাই সতর্ক হয়ে যাবে....

: কাদের কথা বলছেন মি. আলভি?!...

: শীঘ্রই প্রকাশ্য!!.... আচ্ছা মি. সামস!!... সেন্ট্রাল কলেজের প্রিন্সিপালের পরিবার কোথায় থাকে?!....

: পাচুলিয়াতেই....

: ছেলে মেয়েদের বয়স কেমন হবে?...

: উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র বড়টা... কতই বা হবে... এই ষোল বা সতের...

: হুম্মম....আর অন্যরা?...

: দু'টা যময মেয়ে আছে.... এই দশ এগারো হবে বয়স...

: হুম্মম্মম...

: কেন বলুন তো....

: এখন পর্যন্ত যারা খু**ন হয়েছে....বয়সের তফাৎ থাকলেও... সবাই প্রায় উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র...

: হুম্মম... বয়সের বিবেচনায় শিপনই বড়....

: কিন্তু শিপনের আম্মা!!...

: ম... মানে?!...

: রহস্য... রহস্য... শিপন কিন্তু এটাও বলেছিলো... ওর মাও নাকি... পাপমুক্ত করেছে সবাই কে....

: তাহলে এই হ**ত্যাকান্ড কি অনেক পূর্বের?....

: উম্মম্ম... দেখা যাক... বলছিলাম.... মি. সামস আমি একটু বেরবো...

: চলুন না!!...

: নাহ!!.... মানে একাই!!...

: বললেই হয়... ইনভেস্টিগেশনে যাচ্ছেন!!....

আলভি স্মীত হাসে।

: নতুন কোন আপডেট?...

: খু**নি আমাদের ডাইভার্ট করতে চাচ্ছে...

: কিভাবে??...

: রবিনের কাছে গতকাল এক পেশেন্ট এসেছিল... ভিকটিম ভেবে তার ব্লাড টেস্ট করা হয়....

: কি রিপোর্ট এসেছে??....

: নরমাল...

মাথা চুলকে ইন্সপেক্টর সামস বলেন " তাহলে কে ছিল সে?..... "

আলভি এ প্রশ্নের জবাবে নীরব থাকে।

YouTube

দুপুরের খাবার খেয়ে ইন্সপেক্টর সামস চলে যান থানায়। আলভি তখন রুমের ভিতরে ছদ্মবেশ ধারনে ব্যস্ত। মাথায় ঝাকড়া সাদা কালো চুল, চোখে মোটা কাচের চশমা, চেহারায় বড় দাড়ি, শার্টের নিচে কিছু কাপড় দিয়ে নকল স্থুলাকার ভুড়ি, হাতে একখান লাঠি। আলভি নিজেকে আরেক বার গভীর দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করে বেরিয়ে যায়।

-------------------

সেন্ট্রাল কলেজ মাঠ।

বিকালে কলেজের ছেলেরা সবাই এই মাঠে আসে খেলতে। ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে নানা ধরনের খেলায় ব্যস্ত বাচ্চারাও। এলাকার কিছু মানুষ জনও আসছে বৈকালিন ভ্রমণে। আলভি একটি বেঞ্চিতে বসে আছে, হাতে তার ইংরেজি সাহিত্যের নোভেল। তবে তার শৈন্য দৃষ্টি মাঠের আগত প্রতিটি ছাত্রকে নিরিক্ষণ করছে। কিছুক্ষণ পর দশ বারো জনের একটি দল আসে মাঠে। বোঝাই যাচ্ছে তারা একজন কে বেশ প্রাধান্য দিচ্ছে, ঘিরে রেখেছে তাকে। ছেলেদের সেই দলটা আলভি'র থেকে দু বেঞ্চি পরে এসে বসে। কোন কারণে নেতা গোছের ছেলেটির মন ভালো নেই, অন্যরা খেলায় ব্যস্ত হয়ে গেলেও সেই ছেলেটি চুপচাপ সেখানেই বসে থাকে। আলভি এবার গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ায়, হাতে লাঠি টা নিয়ে সামনের দিকে কিছুটা ঝুকে হেটে ছেলেটির পাশে এসে বসে। এতেও ছেলেটির মধ্যে খুব একটা ভাবান্তর হয় না, সে দিব্যি সামনে তাকিয়ে আনমনে বসে আছে। আলভি এবার একটু গলা খাকারি দিয়ে বৃদ্ধের কন্ঠে বলে " দাদু!!.... তোমার নাম কি? "

: সারোয়ার....

নাম টা শুনে আলভি ভ্রু কোচকে তাকায় ছেলেটির দিকে, আবার জিজ্ঞেস করে " তা তুমি কি প্রিন্সিপালের ছেলে?!...."

: জ্বি...

: আচ্ছা বেশ... তোমার মন খারাপ নাকি?...

: নাহ!!....

: উম্মম্ম.... মনেহচ্ছে কোন উত্তর খুজছো?!...

এবার ছেলে টি নড়েচড়ে বসে বলে " দাদু!!.... মানুষ যখন কোন অন্যায় করে.... তখন তার খারাপ লাগে না?!...."

: বিবেকহীন মানুষের অবস্থা হলো উন্মাদ লোকদের মত.... বুঝলে?

: আহ!!... তারপরও এই পাপের বোঝা কিভাবে বয়ে বেড়ায় হাসি মুখ?!!.....

: পাপমুক্তি?!!....

: হুম্মম্ম... আপনিও জানেন?!...

: ন... নাহ!!... তুমি বললে... কি ধারণা তোমার এ সম্পর্কে?

: আত্মার বিসর্জন...

আলভি এমন উত্তরের জন্য অনুমান করেছিলো কিন্তু সামনা-সামনি এ কথা শুনে হতবিহ্বল হয়ে যায়। নিজেকে সামলিয়ে জিজ্ঞেস করে " এটা আবার কেমন কথা?!....."

: হাহ!!... বুঝবেন না দাদু!!....

: বুঝিয়ে বল!...

কিন্তু মনেহয় ছেলে টি উত্তর দিতে চায় না, সে বরং পালটা প্রশ্ন করে " আচ্ছা দাদু!!... আপনাকে তো আগে দেখিনি... নতুন নাকি?!...."

: হ্যাঁ... ঘুরে বেড়ানো আমার শখ.... তাই এবার এলাম পাচুলিয়া....

: হুম....আমাদের পাচুলিয়া শহর টা অনেক সুন্দর!!....

: তুমিও ঘুরেবেরাও বাছা!!.... এভাবে উদাস কেন?!...

: ছিলাম দাদু!!!..... কিন্তু....

: কিন্তু???!!......

:..... ........ ..... চুপ থাকে সারোয়ার

: আচ্ছা বেশ!!.... তুমি হুলিয়া শহরে গেছো কখনো?!...

: না দাদু!!....

: শোন বাছা!!.... জীবনে অনেক প্রশ্ন আসে... যেগুলোর তাৎক্ষনিক উত্তর বা সমাধান পাবেনা.... তবে এর জন্য কখনো হতাশ... কিম্বা ভুল সিদ্ধান্ত নেবে না.... বুঝলে??

: জ্বি দাদু!!....

আলভি একটু ভেবে বলে " তা বাছা গতকালও কি তোমার মন খারাপ ছিলো?!!....."

: হুম্ম....

: তোমার পড়াশোনা কেমন চলছে?!...

: ভালো.... এক্সাম চলছে....

: কাল ছিলো?...

: হুম..

: আচ্ছা দাদুভাই!!.... আজ আসি... মন দিয়ে পড়াশোনা করবে....

আলভি মাঠে পেরিয়ে একটু আড়ালে যেয়ে নিজের ছদ্মবেশ পালটে থানায় যাবার জন্য রিকশায় চড়ে বসে। পথিমধ্যে শান্তানু কল করে জানায় ট্রুথ এন্ড ডেয়ার অ্যাপ টি ওপেন হয়েছে। সম্ভাব্য সব নির্দেশনা দিয়ে দেয় আলভি।

TikTok

ঝড়ের পূর্বাভাস পেয়ে রবিন কে একটা মেসেজ দিয়ে রাখে।

ঘড়িতে সন্ধ্যা সাত টা।

আলভি থানার ভিতরে প্রবেশ করে সোজা ইন্সপেক্টর সামসের কামরায় যেয়ে উপস্থিত হয়। ইন্সপেক্টর সামস বেশ অবাক হয়ে যান ব্যস্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করেন " কি ব্যাপার মি. আলভি!!.... হঠাৎ?? "

আলভি ব্যস্ত হয়ে বলে " একজন ছেলে কে কিছুদিন......আপনার হেফাজতে রাখতে হবে... একদম গোপন থাকবে....."

: কে?!... কি করেছে?!....

: এত বলার সময় নেই দ্রুত চলুন আমার সাথে....

: ক... কোথায় রাখবো?!...

: থানা সেফ হবে না... আপনার বাসায় রাখা যাবে?!...

: হ... হ্যাঁ... কিন্তু কে সে?!!...

: খু**নির দোসর...

: চ... চলুন... তাড়াতাড়ি...

ইন্সপেক্টর সামস আলভি'র নির্দেশনা মত ব্যস্ত এক চৌরাস্তার মোড়ে এসে বাইক থেকে নামে। মাস্ক পরে আলভি নিজেকে ঢেকে নেয়। চোখের ইশারায় ইন্সপেক্টর সামস কে অনুসরণ করতে বলে।

শুনশান এক গলির মুখে এসে দুজনে আড়ালে গা ঢাকা দিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে কারো জন্য। নিরিবিলি রাস্তায় কারো পথ চলার ক্ষীণ শব্দ ভেসে আসতে আলভি একটু উচু হয়ে দেখে নেয়। আগুন্তক আর কেউ নয় বরং তাদেরই কাঙ্খিত মানব। লোক টি চাদর মুড়িয়ে চুপিচুপি কোথায় যেন যাওয়ার জন্য যেই গলির মুখে এসে দাঁড়ায় আলভি আর ইন্সপেক্টর সামস একসাথে তাকে পিছন থেকে ঝাপটে ধরে। কিছুক্ষণ ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আলভি লোকটির কাধে আঘাত করতে জ্ঞান হারায়। ইন্সপেক্টর সামস বাইক নিয়ে দ্রুত এগিয়ে আসলে আলভি পাজকোলা করে লোকটি কে মাঝে বসিয়ে নেয়।

Threads

বাইকে করে পনের কুড়ি মিনিটের মধ্যে তারা বাড়িতে পৌছে যায়। লোকটির জ্ঞান ফিরে আসায় আবার হাতাহাতি'র চেষ্টা করলে ইন্সপেক্টর সামস এবার তাকে দড়ি দিয়ে বেধে একটা ঘরে ফেলে রাখেন।

আলভি ঘরের বাইরে পাইচারি করছিলো ইন্সপেক্টর সামস বেরিয়ে আসলে বলে " মি. সামস!!.... একে তো এভাবে একা রাখা ঠিক হবে না....."

: হুম্মম্ম.... ব্যাটা ঝামেলা করতে পারে....

: দেখুন আজকের রাত টাই হয়ত সময় পাবো....

: তাহলে আ... আপনার ডাকাতি?!!.....

: আমি রবিন কে থানায় যাওয়ার সময় মেসেজ দিয়েছিলাম.... ও আর হয়ত... পনেরো মিনিটের মধ্যে চলে আসবে....

: আচ্ছা.... আমি তাহলে পাহারায় থাকছি....

: হুম্মম... বেশ... আর হ্যাঁ আমি যদি আটকা পড়ি কোনভাবে.... রবিন কে সব জানায় রাখবো বাকি ইনভেস্টিগেশন সে ভাবেই করবেন!!!......

: দোয়া করি কিচ্ছু হবেনা.... আপনি সেফ থাকবেন!!....

: ধন্যবাদ!!

রবিন এসে পৌছতে আলভি ওকে দ্রুত ফ্রেশ হয়ে কিছু খাবার খেয়ে নিতে বলে। অতিথি আসা উপলক্ষে সান্ধ্যকালীন ভোজে মিসেস সামস বেশ কিছু নাস্তার প্লেট সাজিয়ে দিয়ে যান।

রাত দশ'টা বাজলে রবিন কে সঙ্গে নিয়ে আলভি বেরিয়ে যায়। দু'জনেই কালো রঙয়ের শার্ট-প্যান্ট পরা, চেহারা কালো মাস্কে আবৃত।

-------------------

Instagram

রাত এগারো টা।

পাচুলিয়া সেন্ট্রাল কলেজ।

প্রায় ত্রিশ মিনিট হলো আলভি রবিন ঝোপের আড়ালে ঘাপটি মেরে বসে মশার সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। হোস্টেলের ছেলেরা যে যার রুমে চলে গেছে। ওয়ার্ডেনও সব কিছু চেক করে নিজের কামরায় চলে যান।

ফিসফিসিয়ে রবিন বলে " আলভি!!... এখন তো সবাই রুমে চলে গেছে!!....."

: শ.... শ... ধৈর্য্য ধর বন্ধু!!...

গার্ড'রা এখনো সজাগ!!....

বলতেই কোত্থেকে যেন ওদের দিকে টর্চের আলো পরে। আলভি রবিন কে ঝটকা টান দিয়ে মাটির সাথে মিশে শুয়ে যায়। রবিনের মধ্যে চরম উত্তেজনা, বুকের ঢিপঢিপ শব্দ যেন নিজ কানে শুনতে পাচ্ছে। আলো টা সরে গেলে আলভি দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলে " দেখেছো!!.... পিছনের দিকটাও এরা চেক করে!!....."

: ভিতরে ঢুকবো কিভাবে!!....

: একটু এগোলেই ভাঙ্গা দেয়াল পাবে... কোনভাবে গা গলিয়ে ঢুকতে হবে.....

আলভি চারিদিকে সূক্ষ্ম দৃষ্টি বুলিয়ে রবিন কে ইশারা করে পিছুপিছু আসতে। কলেজের পিছনের এই দেয়াল টা অর্ধেক ভাঙ্গা, দুজনেই ছোট লাফ দিয়ে ঢুকে যায় কলেজ সীমানায়। একটা জানালার দিকে ইশারা করে আলভি রবিনকে বলে ওইটাই প্রিন্সিপালের কামরা কিন্তু সে পর্যন্ত পৌছতে হলে তাদের বিল্ডিংয়ের সম্মুখ গেট দিয়ে ঢুকতে হবে তবে সমস্যা হলো সেখানেও একজন গার্ড থাকে। আলভি রবিন গার্ড রুমের বা' দিকে অন্ধকার গা ঢাকা দিয়ে দাড়িয়ে আছে। মধ্যবয়স্ক গার্ড তখন কারো সাথে ফোনালাপে ব্যস্ত ছিলো। আলভি চোখের ইশারা করতে রবিন পরপর দুটো ঢিল ডা' দিকে ছুড়ে মারে। হঠাৎ এমন শব্দে গার্ড ওদিকে টর্চ জ্বালিয়ে যেতেই এরা চুপিসারে ঢুকে যায় কলেজ বিল্ডিংয়ের ভিতর। মৃদ্যু আলো জ্বালানো লম্বা করিডর। সি সি ক্যামেরা থেকে গা বাচিয়ে আলভি রবিনের হাত ধরে দ্রুত পদে সিড়ির দিকে এগিয়ে যায়। সিড়িতে পা দিবে এমন সময় আলভি লক্ষ্য করে উপর থেকে কারো ছায়া দেখা যাচ্ছে। তড়িঘড়ি সিঁড়ির নিচে এসে গুটিশুটি হয়ে বসে পরে। উপরের গার্ড আপনমনে নেমে আসে সিঁড়ি বেয়ে। তবে সমস্যা হলো লোকটা করিডরে এসে দাঁড়িয়ে যায়, পকেট থেকে ফোন বের করে দেখা শুরু করে। প্রায় মিনিট দশেক পার হয়ে গেলেও তার নড়চড়ের কোন নামগন্ধ নেই।

WhatsApp

আলভি এবার বিরক্তি নিয়ে বলে " ব্যাটা সর এখান থেকে...নইলে এমন রিল বানাবো তোমাকে নিয়ে..."

এদিকে মশার কামড়ে বেচার রবিন অসহায় হয়ে বলে " আর কতক্ষন এই মহাশয় ফোন চালাবে!!...."

ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকায় প্রায় কুড়ি মিনিট পরে এই গার্ড কে ডেকে নিয়ে যায় মধ্যবয়স্ক অপরজন। আলভি তাড়া দেয় দ্রুত উপরে উঠার। দোতলার লম্বা করিডরের শেষ মাথায় প্রিন্সিপালের কামরা। মাস্টার কি দিয়ে সন্তপর্ণে তালা খুলে ভিতরে ঢোকে আলভি আর রবিন। দরজা লক করে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে হাফাতে থাকে রবিন।

আলভি বলে " এমন করছো কেন!!... সময় কম... দ্রুত কাজে লেগে যাও!!...."

: ওরা যদি আমাদের সিসি ক্যামেরায় দেখে নেয়!!...

: হুম্মম দেখবে... কিন্তু ততক্ষণে কেল্লাফতে...

আলভি সময় নষ্ট না করে কাজে লেগে যায়। রবিনও কিছুটা ধাতস্থ হয়ে টর্চ হাতে আলভি'র পাশে এসে দাঁড়ায়। বেশকিছুক্ষন খোঁজাখুজি পর একটা ফাইলে আলভি'র দৃষ্টি আটকায়। হাতে নিয়ে গভীর মনোযোগে প্রতিটা পাতা উলটে দেখছিলো। এটা মূলত গতবছর অনুষ্ঠিত কলেজের পুনর্মিলনীর অনুষ্ঠানের ফাইল ছিলো। কত সালে কোন ব্যাচের কে কে শিক্ষার্থী ছিলো তার ডিটেইলস লিপিবদ্ধ করা। বেশ কিছু পাতা উল্টানোর পর একটি পাতার কিছু তথ্য দেখে আলভি ও রবিন দু'জনেই হতবাক হয়ে পরস্পরের দিকে তাকায়। দ্রুত কয়েকটি ছবি তুলে নেয় আলভি। যা জানার ছিলো তা পেয়ে গেছে। ফাইল টা জায়গা মত রেখে যেই ওরা বের হতে যাবে তখনই শুনতে পায় কলেজ বিল্ডিংয়ের সিকিউরিটি এলার্ম বাজিয়ে দেয়া হয়েছে।

চলমান......

( গল্প টি আপনার কেমন লাগছে কিংবা এর প্লটের কোন ভুল ত্রুটি থাকলে কমেন্ট বক্সে জানানোর অনুরোধ রইলো)

আত্মহত্যার নেপথ্যে পর্ব ৮

Post a Comment

0 Comments

Close Menu