লেখিকাঃ তানজিল মীম
মধ্যরাতে হঠাৎই কারো কান্নার শব্দ কানে আসতেই ঘুম ভাঙল ধ্রুবর। বেশ বিরক্ত হলো সে। তবুও দ্বিতীয়বারের মতো চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করল। কিন্তু ঘুমানো গেল না। কান্নার শব্দটা খুব তীক্ষ্ণভাবেই কানে ঠেকছে তার। ধ্রুব উঠে বসল। পরমুহুর্তেই রুমের লাইট জ্বালালো। এরপরই বিরক্তের বেসে কৌতুহলী ছুটে গেল বারান্দার দিকে। অপরপাশের বারান্দায় একটা মেয়ে সাদা জামা পড়ে পেত্নী বেশে দাঁড়িয়ে আছে। চোখ দিয়ে পানি পড়ছে কিনা বোঝা যাচ্ছে না। ধ্রুব তক্ষৎণাৎ ধমক দিয়ে বলল, “এই মেয়ে হচ্ছেটা কি?”
আচমকা এক পুরুষালির কণ্ঠ কানে বাজতেই চমকে উঠল তটিনী। কপট অবাক হয়ে বলল,
“আমাকে বলছেন?”
ধ্রুবর চোখে মুখে রাগ, “এত রাতে হচ্ছে কি এখানে? কাঁদতে হলে নিজের ঘরে বসে ওয়াশরুমে গিয়ে দরজা আঁটকে কাঁদুন। বাহিরে এসে নাটক করছেন কেন?”
তটিনী যেন অবাক না হয়ে পারল না। সে অদ্ভুত স্বরে বলল, “আপনি কি পাগল হলেন নাকি আচমকা কাঁদতে যাব কেন?”
ধ্রুবর রাগটা যেন আরো বাড়ল। তীক্ষ্ণ স্বরে শুধাল,
“নাটক করবেন না। আপনার কান্নার শব্দে আমি ঘুমাতে পারছি না।”
তটিনীর চোখে-মুখে বিস্ময়। সে আওড়ায়,
“আপনার কোথা থেকে মনে হচ্ছে আমি কাঁদছি।”
ধ্রুব এবার একটু আগ্রহের বেশে তাকাল তটিনীর দিকে। তটিনীর কক্ষে বাতি জ্বলছে। চোখে-মুখেও বিন্দুমাত্র কান্নার ছোঁয়া নেই। তবে কি ধ্রুব ভুল শুনল। কান্নার শব্দ এখন আর পাওয়া যাচ্ছে না। ধ্রুব কিছু বলল না। পুনরায় দরজা আঁটকে বিছানায় শুয়ে পড়ল। ইদানীং তার কি যেন হয়েছে। ঘুমাতে গেলেই কান্নার শব্দ শুনতে পায়। বেশ কয়েক দিন যাবৎই লক্ষ্য করেছে। এছাড়া জানালা দিয়ে দেখেছে ওপাশের বারান্দায় ওই মেয়েকে দাঁড়িয়ে থাকতে। কখনও এগিয়ে গিয়ে কথা বলেনি আজ কান্নার শব্দটা প্রবল ছিল যার দরুন ছুটে গেল দ্রুত। ধ্রুবর বিরক্ত লাগছে। কি করবে বুঝছে না– আবারও কান্নার শব্দ শোনা যায়। কে কাঁদে এমন!'
ধ্রুব ঘুমিয়ে পড়ল। পরেরদিন সকালে চায়ের দোকানে চা খেতে বসল ধ্রুব। মা বাড়ি নেই। কাল সন্ধ্যায় ধ্রুবর ছোট বোনকে নিয়ে নানাবাড়িতে গিয়েছে। ধ্রুবর বাবাও বন্ধুদের সাথে দু'দিনের জন্য বাগেরহাট গিয়েছেন। বর্তমানে ধ্রুব একাই বাড়িতে ছিল। যদিও আজ ধ্রুবর মায়ের ফিরে আসার কথা। ধ্রুবরা নতুন বাড়িতে উঠেছে আজ দশদিন। আর কান্নার শব্দটা গত চারদিন যাবৎ শুনতে পাচ্ছে। ধ্রুব চায়ের কাপে চুমুক দিল। দ্রুত অফিস পৌঁছাতে হবে। ধ্রুব চায়ের কাপটা চা ওয়ালার কাছে দিয়ে বলল,
“আচ্ছা মামা, আপনি তো অনেক রাত অবদি এখানে চা বিক্রি করেন তাই না?”
রতন মিয়াও আয়েসি ভঙ্গিতে বললেন,
“হ। ধরতে গেলে এহানেই থাহি। ওই যে সামনের ভাঙাচোরা বাড়িহান দেহো ওইখানের নিচতলায় থাহি।”
“ওহ আচ্ছা।”
“হ। তুমরা এই এলাকায় নতুন আইছো না?”
ধ্রুবও বিনয়ের সাথে উত্তর দিল,“জি।”
ধ্রুব পকেট থেকে মানিব্যাগটা বের করে চায়ের বিল মেটালো। কিছুক্ষণ ভেবে প্রশ্ন করল, “আচ্ছা মামা, আপনি কি কাল রাতে কারো কান্নার শব্দ শুনেছিলেন?”
রতন মিয়া অবাক হয়ে বললেন,
“কই না তো।”
“ওহ আচ্ছা। ঠিক আছে মামা। ভালো থাকেন। আমার অফিস আছে পরে আবার কথা হবে।”
রতন মিয়া মিষ্টি হেঁসে বললেন,“আচ্ছা মামা।”
ধ্রুব চলে গেল। দূর থেকে নিজ বারান্দায় দাঁড়ানো তটিনী তাকে লক্ষ্য করল।'
সময় চলতে থাকে। সঙ্গে কান্নার শব্দটাও যেন বেশি বেশি আসতে থাকে। ধ্রুব প্রায় মাঝরাতে তটিনীর সাথে রাগারাগি করে। কিন্তু পরমুহূর্তেই গিয়ে বুঝতে পারে তটিনীর কোনো দোষ নেই। সে কাঁদে না কোনো রাতেই। ধ্রুবর দিনে দিনে ব্যাপারটা কেমন যেন অদ্ভুত ঠেকে। বাড়ির কাউকে জিজ্ঞেস করলেও বলে,“তারা কোনো রাতেই কান্নার শব্দ পায় না।”
একরাতে ধ্রুব তার মাকে নিয়ে নিজ ঘরে থাকে। মাকে শোনাতে চায় কেউ কাঁদে কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার সে'রাতে কেউই কাঁদেনি। ধ্রুব মনে মনে কিছু পরিকল্পনা করে। তার মনে হয় সামনের বারান্দার তটিনী মেয়েটাই কিছু করছে। না হলে রোজ রাতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকে কেন!'
তখন মধ্যরাত। ধ্রুব তার পুরো রুমের লাইট বন্ধ করে ফেলেছে। যাতে বাহির থেকে মনে হয় সে ঘুমিয়ে গেছে। আজ তাকে ধরতেই হবে মাঝরাতে কে কাঁদে? ধ্রুব জানালার আড়াল দিয়ে বাহিরে তাকায় তেমন কাউকে দেখা যাচ্ছে না। কিছুসময় যায় হঠাৎই অপরপাশের বারান্দায় হাতে একটা ছোট্ট মিউজিক সিস্টেম নিয়ে দাঁড়ায় তটিনী। এর কিছুক্ষন পরেই সেটা চালু করতেই একটা মেয়ের কান্নার স্বর শোনা যায়। ধ্রুবর আর বুঝতে বাকি রইল না এতদিন যাবৎ কে কাঁদছিল! ধ্রুব উঠে দাঁড়ায় রোজকারের মতো আজ আর লাইট জ্বালালো না। হাতের ফোনটা নিয়েই এগিয়ে গেল নিজের বারান্দার কাছে।'
এদিকে,
তটিনী ধ্রুবর রুমের দিকে তাকিয়ে আছে আজ এখনও কেন লাইট জ্বলছে না। আর বেশিক্ষণ এটা চালালে তো এলাকার মানুষ তাকে মেরেই ফেলবে। হঠাৎ ধ্রুবর কণ্ঠ শোনা যায়। সে তটিনীর মুখের ওপর মোবাইলের লাইটটা জ্বালিয়ে বলল,
“ইউ ইডিয়েট গার্ল, তার মানে রোজ রাতে আপনিই এই বদমাশি করেন।”
তটিনীর বুকসমেত কেঁপে উঠল। তবে কি সে ধরা পড়ে গেল। তটিনী দ্রুত মিউজিক সিস্টেমটা বন্ধ করে ফেলল। আমতাআমতা করে বলল,
“না মানে...”
“বেশি কথা বললে একদম দাঁত ভেঙে দিব। এটা কোন ধরনের বেয়াদবি?”
“আমি আসলে..
“আর একটা কথা বললে আমি আপনার বাসায় চলে আসব। অসভ্য মেয়ে, রোজরাতে মশকরা হচ্ছে আমার সাথে।”
তটিনী চুপ হয়ে গেল। কি বলবে বুঝতে পারছে না। ধ্রুব ধমক দিয়ে বলল, “আমি আপনায় কাল দেখে নিব। অভদ্র মেয়ে কোথাকার! আর যদি কান্নার শব্দ কানে আসে তবে আমি আপনার নামে পুলিশের কাছে ইভটিজিংয়ের মামলা করব। অসভ্য, অভদ্র, বেহায়া মেয়ে। আপনায় কাল দেখছি আমি।”
কথাগুলো বলেই রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে ঘরে চলে গেল ধ্রুব। আর তটিনী দ্রুত দৌড়ে নিজের কক্ষে চলে গেল।'
-
পরেরদিন! রিকশা করে ভার্সিটি থেকে ফিরছিল তটিনী। আচমকা রিকশার সম্মুখে এসে দাঁড়াল ধ্রুব। রিকশা থেমে গেল। ধ্রুবকে দেখতেই তটিনীর গলা শুকিয়ে আসে। ধ্রুব ধমকের স্বরে বলে,
“এই মেয়ে রিকশা থেকে নামো!”
তটিনী নেমে পড়ল। রিকশার ভাড়া মিটালো দ্রুত।'
ধ্রুব প্রথমে তটিনীকে দেখল। এরপর একরাশ রাগ নিয়ে বলল, “রোজ রাতে বেয়াদবি করার মানে কি?”
তটিনী ভীতু হলো। আমতা স্বরে বলল,
“আমি আসলে,
“আমতা আমতা করলে সোজা বাড়ি চলে যাবো তোমাদের।”
“না না প্লিজ এমনটা করবেন না।”
“এসব করার মানে কি?”
“আসলে,
“দেখো মেয়ে, আমায় বেশি রাগীও না এমনিতেই তোমার ওইসব পাগলামিতে আমি ঘুমাতে পারিনি বহুরাত। তাই যা বলার সোজাসাপ্টা বলো।”
তটিনী বলতে পারল না। তার হাত পা কাঁপছে। তটিনী তার ব্যাগ থেকে একটা চিঠি বের করল। ধ্রুবর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,“এটা পড়ুন।”
ধ্রুবর ইচ্ছে না থাকলেও সে চিঠিটা ধরল। খুলে পড়তে লাগল। যেখানে তটিনী লিখেছে,
আমি প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি জানি আমার আসলে রাতের বেলা ওইসব করা ঠিক হয়নি। আসলে প্রথম যেদিন আপনি আমায় কান্নার কথা বলে কথা শুনিয়ে ছিলেন সেদিনই আপনাকে আমার ভালো লেগেছিল। ওইদিন আমি সত্যিই কাঁদিনি আর আশেপাশে কাউকে কাঁদতেও শুনিনি। তবুও আপনি আমায় কথা শুনিয়েছিলেন। আপনি কথা শোনালেও আমি আপনার ওপর কোনোরূপ রাগ করিনি। উল্টো ভালো লেগেছে। আমি কিছু অনুভব করেছি যা এর আগে কখনো কোনো পুরুষ মানুষ দেখে অনুভব করিনি। এরপর আমি আপনায় বহু জায়গায় দেখেছি কখনো রতন মামার চায়ের দোকানে, কখনো পার্কে হাঁটতে, কখনো ছাঁদে, কখনো বা আপনার মায়ের সাথে মার্কেটে। এই দেখতে দেখতে কবে যে আপনায় ভালোবেসে ফেলেছি আমি বুঝতে পারিনি। আমি খুব করে চাইতাম আপনার সাথে কথা বলতে। কিন্তু সেইভাবে কখনো সুযোগই হয়ে উঠছিল না। আপনার কণ্ঠ শোনার জন্য আমি অস্থির হয়ে উঠছিলাম। তাই আর কি রাতে বেলা। আমি দুঃখিত। আপনার ধমকে কথা বলাতে আমি প্রেমে পড়েছি। তাই এমনটা করেছি আপনার ধমক শোনার জন্য।”
পুরো চিঠি পড়ে স্তব্ধ বনে তাকিয়ে রইল ধ্রুব তটিনীর দিকে। এই মেয়েকে পাগল ছাড়া আর কিছু মনে হচ্ছে না তার। ধ্রুব ধমকের স্বরে প্রশ্ন করল, “ভালোবাসো আমায়?”
তটিনী সাহস করে উপর-নীচ মাথা নাড়াল। ধ্রুব কিছু সময় চুপ থেকে আচমকাই হেঁসে উঠল। একটা মানুষ আরেকটা মানুষের ধমকের প্রেমে পড়তে পারে এ যেন তটিনীকে না দেখলে বুঝতেই পারত না। ধ্রুব শক্ত কণ্ঠে বলল, “ঠিক আছে। কাল বিকেল পাঁচটায় গলির মোড়ে আসবে।”
তটিনীও মাথা নাড়িয়ে বলল, “ঠিক আছে।”
তটিনী চলে গেল। ঠোঁট জুড়ে রইল তার মিষ্টি হাসি। আর ধ্রুব মিষ্টি স্বরে শুধাল,“এভাবেও ভালোবাসা হয়। কি অদ্ভুত! কি অদ্ভুত!'
ধ্রুব আবার হেঁসে ফেলে। ধীরে ধীরে ধ্রুব আর তটিনীর মাঝে প্রেম-প্রণয়ের সম্পর্ক তৈরি হয়। বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি, কথা বলা, চ্যাটিং সবমিলিয়ে প্রেমটা হলো মাখোঁ মাখোঁ।'
তবুও কোথা গিয়ে এখনও ধ্রুব মধ্যরাতে কারো কান্নার শব্দ পায়। তবে গুরুত্ব দেয় না। কারণ সে জানে এটা তটিনী ছাড়া আর কেউ না। মেয়েটা আস্ত একটা পাগল।'
সময় যায়। গুনতে গুনতে ধ্রুবদের জীবন থেকে চলে যায় চারমাস।'
আজ তটিনী আর ধ্রুবর বিয়ে। বিয়েটা পারিবারিকভাবেই হলো। ধ্রুবরাই বিয়ের প্রস্তাব পাঠাল তটিনীদের বাড়ি। যেহেতু ধ্রুব একজন সরকারি কর্মকর্তা। দেখতে শুনতে সুদর্শন। তাই খুব একটা বেগ পেতে হলো না এক্ষেত্রে। পারিবারিকভাবেই স্বল্প আয়োজনে বিয়েটা সম্পন্ন করা হলো তটিনী আর ধ্রুবর।'
রাত তখন সাড়ে বারোটা। বধূবেসে বিছানায় বসে আছে তটিনী। লাল টুকটুকে লেহেঙ্গা বেসে তাকে খুব চমৎকার দেখাচ্ছে। দরজায় খটখট করে শব্দ হয়। তটিনী লজ্জায় মিইয়ে যায়। ধ্রুব আসে। তার গায়ে পাঞ্জাবি জড়ানো। ধ্রুব এগিয়ে এসে তটিনীর মুখোমুখি বসে। মুখের ঘোমটা সরিয়ে বলে, “ভালোবাসি।”
তটিনী মুচকি হেসে জানায়,
“আমিও।”
“আর রাতে পাগলামি করবে তুমি।”
“ওসব তো কবেই ছেড়েছি।”
“তুমি আস্ত একটা পাগল।”
“আপনার জন্যই তো।”
“সবটা কি খুব দ্রুত হলো?”
“আপনি মানুষটা এত ভালো যে, বাবা বারণ করার বাহানাই পেলেন না।”
তটিনী দেরি করল না। তক্ষৎণাৎ জড়িয়ে ধরল ধ্রুবকে। ধ্রুবও ধরল তাকে। বেশক্ষণ কাটল এমন। হঠাৎই ধ্রুবর মনে হলো তার কানে কান্নার শব্দ আসছে। অথচ যে কাঁদার পাগলামি করত সে ধ্রুবর কাছেই বসে। বাহির থেকে এক ধমকা হাওয়া ধ্রুবর চুল নাড়িয়ে দেয়। সে বিস্মিত হয়। তার আচমকাই মনে হয় কে যেন ফিসফিস করে বলে, “এই যে শুনতে পাচ্ছেন, “কে যেন হঠাৎ কাঁদে?”
পরিশিষ্ট–
বিয়ের দুসপ্তাহ পরই ধ্রুবরা ওইবাড়ি ছেড়ে নতুন বাড়ি ভাড়া নেয়। কারণ ধ্রুব শুনেছে বহুবছর আগে এক যুবতী মেয়ে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে প্রেমিকের ধোঁকা সহ্য করতে না পেরে গলায় দরি দিয়েছিল ধ্রুব যে রুমে থাকত সেই রুমেই। ধ্রুবর আগেও বেশ কয়েকটি যুবক ওই ঘরে থেকেছে। তারাই প্রায় মধ্যরাতে শুনতে পেত—কে যেন হঠাৎ কাঁদে?”
আর এই কান্নার শব্দ ধ্রুবর মতো যুবকরাই শুনতে পেত। এমনটা কেন ধ্রুব ধরতে পারিনি। কারণ প্রকৃতিতে এখনও এমন কিছু ব্যাপার আছে যার রহস্য কেউ খুঁজে পায়নি। প্রকৃতি ধরা দেয়নি। কারন প্রকৃতি রহস্যে থাকতে পছন্দ করে।'
'এই পুরো গল্পটা আপনার কাছে প্রেমকাহিনী মনে হতে পারে। কিন্তু আধতেও এটা কোনো প্রেমকাহিনী ছিল না।'
0 Comments