লেখিকাঃ তানজিল মীম
পরন্ত বিকেলে নিস্তব্ধতার ভীড়ে উতালপাতাল শব্দে চারিপাশে বইছে বাতাস। বাতাসে আশপাশে গাছগাছালির পাতারা উড়ছে বারংবার। বিশাল পুকুরের মাঝ দিয়ে বয়ে চলছে পানিদের উড়ন্ত মন। দুলছে তাঁরাও। কখনো এপাশ তো কখনো ওপাশ? সাদা ধবধবে আকাশটার পথ বেয়ে উড়ে চলছে পাখিরা। রোদ্দুরের ছিটে ফোঁটা নেই মোটেও এসবের ভিড়ে খোলা মাঠের মাঝে পুকুরের কাছ দিয়েই থাকা বিশাল এক সবুজে মেলে থাকা গাছের নিচে ছোট্ট একটা বেঞ্চে বসে আছে একজন চল্লিশ পঞ্চাশ বছরের লোক। পড়নে তাঁর কালো পাঞ্জাবি,কালো প্যান্ট সাথে গায়ে পাতলা একটা চাঁদর,মুখ ভর্তি করা দাঁড়ি। মনের গহীনের কিছুটা ভালো লাগা নিয়ে এই সুন্দর মায়াবী সময়ের পরিবেশটাকে রং তুলি দিয়ে আঁকছেন উনি। জীবনের এতগুলো সময়ে ঠিক কতকিছু পেয়েছেন উনি জানা নেই তাঁর তবে ব্যর্থতার এক গল্প ঠিকই উপহার পেয়েছেন উনি। জোরে দীর্ঘ শ্বাস ফেললো লোকটি।
এমন সময় তাঁর ডান দিকে রাস্তা দিয়ে আসতে লাগলো একটা সতেরা আটারো বছরের মেয়ে। চোখে মুখে মনখারাপের ছাপ। সাথে কিছুটা রাগেরও প্রলেপ দেখা যাচ্ছে হয়তো বাসা থেকে কোনো কারণে রাগ করে এসেছে এখানে নয়তো ভালোবাসার মানুষের সাথে ঝগড়া। মেয়েটি হন হন করে হাঁটতে হাঁটতে এসে বসলো সেই বেঞ্চটায় লোকটার থেকে কিছুটা দূরত্ব নিয়ে। তারপর তড়িঘড়ি করে ফোন করলো কোনো এক নাম্বারে ফোন ধরতে একটু লেট হওয়াতে কর্কশ কন্ঠ নিয়ে বললো মেয়েটি,
' পিহু আমি আজই স্বাধীনের সাথে ব্রেকআপ করবো?'
অপরপাশে নীলার কথা শুনে নিরাশ চেহারা নিয়ে বললো পিহু,
' আবার কি হলো?'
' কি হয় নি সেটা বল ও আমায় না বলে কি করে পারলো বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যেতে।'
উওরে হতাশা ভরা কন্ঠ নিয়ে বললো পিহু,
' সামান্য এই বিষয়ের জন্য তুই ব্রেকআপ করবি।'
' সামান্য বিষয় তোর কাছে এটা সামান্য মনে হচ্ছে আজ বন্ধুদের কাছে না বলে গেছে কাল তো অন্য মেয়ের সাথেও যেতে পারে।'
' তুই জানিস নীলা স্বাধীন এমন কিছুই করবে না, ও তোকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে।'
' ভালোবাসে না ছাই সব লোক দেখানো, ভালোবাসলে কি করে পারলো এইভাবে না বলে চলে যেতে।'
' হয়তো সময় হয়ে ওঠে নি বা ফোনে চার্জ নেই আবার এমনও হতে পারে হুট করেই বন্ধুরা প্লান করে ফেলেছে তাই হয়তো বলতে পারে নি।'
' তুই যতই বল আমি আজ ওর সাথে ব্রেকআপ করেই ছাড়মু।'
' তোর যা খুশি তাই কর।'
বলেই ফোন কেটে দিলো পিহু। কারন সে জানে এখন নীলার সাথে কোনো কথা বলা বা না বলা দুটোই সমান। পিহুর কাজে আরো রেগে গেল নীলা। গম্ভীর কণ্ঠ নিয়ে বললো সে,
' যেমন পিহু তেমন স্বাধীন দুটোর একটাও ভালো না। সব ভেজালগুলো আমার ভাগ্যেই কেন পড়ে?'
এমন সময় এক অপরিচিত কন্ঠ ভেসে আসলো নীলার কানে। বললো লোকটি,
' যদি সব ইস্যু নিয়েই বাড়াবাড়ি করো তাহলে ভেজাল তো লাগবেই।'
চোখ মুখ কুঁচকে তাকালো নীলা পাশের লোকটির দিকে। তাঁরপর বিস্মিত কন্ঠ নিয়ে বললো সে,
' মানে?'
চোখ তুলে নিজের আঁকা বন্ধ করে তাকালো লোকটি নীলার মুখের দিকে। তারপর বললো,
' ভালোবাসা হলো ময়ূরীরের মতো যখনই মেলে দিবে তখনই সুন্দর।'
বেশ উদাসীন হয়ে বললো নীলা,
' আপনার কথার অর্থ বুঝলাম না।'
' আমি বলতে চাইছি তুমি যদি কাউকে নিজের ইচ্ছে মতো চালাতে চাও তাহলে সেটা বিষাক্ত হবে অপর প্রান্তের মানুষটা জন্য। আর জানো তো ভালোবাসায় বিশ্বাস থাকাটা কতটা জরুরি।'
' তার মানে আপনি বলতে চাইছেন আমি যাকে ভালোবাসি তাঁকে তাঁর ইচ্ছে মতো থাকতে দিবো ভুলভাল কিছু করলেও কিছু বলবো না।'
' আমি সেটা কখন বললাম তবে সব ক্ষেত্রে নয় যেমন এই মাত্র তুমি যে কারণে ব্রেকআপ করার কথা বললে সেটা কি ঠিক। ভালোবাসায় সবচেয়ে জরুরি কি জানো বিশ্বাস। যাকে ভালোবাসো তাঁকে যদি বিশ্বাসই করতে না পারো তাহলে কিসের ভালোবাসা।'
' কিন্তু ও যে আমায় না বলে চলে গেল তাঁর বেলা এখন পর্যন্ত একটা ফোনও দেয় নি।'
' একটু ধৈর্য ধরো নিশ্চয়ই কোনো কারন আছে! বিশ্বাস রাখো যে সে তোমায় ফোন করবেই।'
' যদি না করে?'
' সেটা নিয়ে না হয় পড়ে ভাব্বো।'
উওরে নীলার কিছু বললো না চুপটি করে বসে রইলো বেঞ্চে। নীলাকে চুপ হতে দেখে লোকটিও আর কিছু না বলে আবার নজর দিলো নিজের আঁকা বুকির কাজে।'
বলতে না বলতেই কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ফোনটা বেজে উঠল নীলার উপরে আননোন নাম্বার দেখে বেশ কিছুটা সময় নিয়ে বললো নীলা,
' হ্যালো?'
নীলার ভয়েস শুনতেই অপর প্রান্তে নীলার বয়ফ্রেন্ড স্বাধীন বলে উঠল,
' আগেই সরি বলছি জানু।'
স্বাধীনের কথা শুনে সামনের লোকটির দিকে এক পলক তাকিয়ে না জানার ভান করে বললো নীলা,
' হঠাৎ সরি কেন?'
' আসলে কি হয়েছে বলো তো হুট করেই রাতুল ওঁরা ঘুরতে যাওয়ার প্লান করলো আমি বারন করেছিলাম কিন্তু শোনে নি আমায় জোর জবরদস্তি করে নিয়ে এসেছে। ওদের জোর জবরদস্তির ঠেলায় আমি আমার ফোনটা বাসাতেই রেখে এসেছি তাই তোমায় বলতে পারি নি সরি। আরো আগেই ফোন করতাম কিন্তু তুমি তো জানো আমার বন্ধুগুলায় কি পরিমান কিপ্টে সহজে ফোনে টাকা ভরে না তাই অচেনা এক লোকের নাম্বার দিয়ে ফোন দিলাম। প্লিজ রাগ করো না।'
উওরে নীলা কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো,
' ঠিক আছে তাড়াতাড়ি ফিরে এসো।'
উওরে স্বাধীন খুশি হয়ে বললো,
' হুম থ্যাংক ইউ জানু। এখন তবে রাখি বাড়ি গিয়ে ফোন দিবো।'
' ঠিক আছে।'
উওরে স্বাধীন আর কিছু না বলে ফোনটা কেটে দিলো। আর নীলা নিশ্চুপে কিছুটা অবাক চোখে তাকালো সামনের লোকটার দিকে। নীলাকে নিজের দিকে তাকাতে বলে উঠল লোকটি,
' কি দিলো তো ফোন। সবসময় রাগের মাথায় সিদ্ধান্ত নিতে নেই বুঝলে।'
' হুম বুঝলাম থ্যাংক ইউ আক্কেল।'
উওরে মুচকি হাসলো লোকটি। কিছুক্ষন ওভাবেই বসে রইলো দুজন। হঠাৎই নীলা প্রশ্ন করে বসলো,
' আপনি যাকে ভালোবাসেন তাঁকে নিশ্চয়ই অনেক বিশ্বাস করেন।'
' হুম করতাম।'
' করতাম কেন এখন আর করেন না।'
' এখন আর বিশ্বাস করার তেমন প্রয়োজন পরে না।'
উওরে বেশ অবাক হয়ে বললো নীলা,
' মানে?'
' মানে সে এখন আর আমার কাছে থাকে না তাই বিশ্বাস অবিশ্বাসের প্রশ্নই আসে না।'
' আপনাদের কি ডিভোর্স হয়ে গেছে?'
' বিয়েই হয় নি আবার ডিভোর্স।'
' তার মানে?'
' একজনকে ভালোবেসেছিলাম কিন্তু পরিস্থিতি আমাদের এক হতে দেয় নি।'
লোকটির কথা শুনে কৌতুহলী জিজ্ঞেস করলো নীলা,
' কি হয়েছিল আপনাদের মধ্যে?'
নীলার কথার শুনে হাতের রঙ করার তুলিটা আঁটকে গেল ওখানে। থতমত বুকটা কেঁপে উঠলো আপনাআপনি। পুরনো ক্ষতটা যেন আবার জাগ্রত হলো হৃদয়ে। বুক চিঁড়ে দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে আসলো তাঁর। আকার খাতাটাকে বেঞ্চের এক কোনায় রেখে বললো,
' শুনবে তুমি আমার জীবনের সংক্ষিপ্ত এক গল্পের কাহিনি?'
নীলা বেশ আগ্রহ নিয়েই বললো,
' হুম বলুন।'
লোকটি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলতে শুরু করলো।'
বয়সটা তখন সবে ষোলো। মাধ্যমিক দিবো সেবার। তো হঠাৎ একদিন প্রচন্ড বৃষ্টির মাঝে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে হেঁটেই বাড়ি ফিরলাম গরীব ছিলাম খুব। মেয়েটাকে দেখেছিলাম তখনই বড় গাড়ি করে যাচ্ছিল সে। জানালাটা খোলাই ছিল তাই হয়তো মুখটা দেখেছিলাম। ভালোবাসার প্রথম অনুভূতি সেদিনই হয়েছিল। বয়সটা ঠিক কতটা পারফেক্ট ছিল সেই অনুভূতির জন্য বুঝি নি। অতঃপর সেদিন মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে শুধু মেয়েটাকেই দেখেছিলাম যতক্ষণ গাড়িটা দেখা যাচ্ছিল আমি শুধু তাকিয়েই ছিল। তারপর বলতে না বলতেই গাড়িটা বৃষ্টির ভিড়ে হারিয়ে গেল। এরপর বিভিন্ন জায়গায় দেখতাম মেয়েটাকে কখনো রাস্তার ধারে বাবার হাত ধরে আইসক্রিম খেতে তো কখনো গাড়ি করে ছুটে যেতে। দিন কাটছিল তারপর বলতে না বলতে মাধ্যমিকের এক্সাম শেষ হলো এক্সামের ভালো রেজাল্ট করায় একটা ভালো কলেজে চান্স পেলাম। আর এটাই ছিল তাঁর সাথে দেখা হওয়ার সাথে কথা বলার সূচনা কারন সেও সেই কলেজেই পড়তো। ক্লাসে ভালো রেজাল্ট করায় আমার পাশেই বসতো মাঝে মাঝে পড়াশোনায় হেল্প করতাম। এভাবে ধীরে ধীরে ক্লাসমেট থেকে বন্ধুত্ব আর ভালোবাসা তো আগেই ছিল। ইন্টারের সেকেন্ড ইয়ারের সাহস করে প্রপোজ করে দিলাম ভেবেছিলাম এত বড় লোকের মেয়ে হয়তো রিজেক্ট করে দিবে। কিন্তু আমায় অবাক করে সে আমার ভালোবাসা একসেপ্ট করে নিলো। এরপর থেকে যেন বড় লোক হওয়ার একটা নেশা চড়লো মাথায়। আমি দিনরাত অনেক খাটতাম। অনেক পড়াশোনা করতাম সাথে কাজও করতাম। কারন আমি জানতাম তাঁকে বিয়ে করতে হলে আমাকে অনেক টাকার মালিক হতে হবে। কত কিছুই না করেছি তাঁকে পাওয়ার আশায় লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পেপার সাপ্লাই করা, টিউশন করানো, গাড়ি পরিষ্কার করা আরও কতকি?' লোকের অনেক কথাও শুনেছি। নিজের পড়াশোনার খরচ সাথে ওঁকে ভালো রাখার নেশা সবকিছুই মাথায় ঘুরতো আমার। এভাবেই কেটে গিয়েছিল দু'বছর। ভার্সিটিতেও আমরা একসাথে ছিলাম। এর মধ্যে হঠাৎ একদিন ও বলে ফেললো ওর নাকি বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।'
তোমায় বলে বোঝাতে পারবো না হৃদয়টা যেন দুভাগ হয়ে গিয়েছিল সেদিন। আমার এত কষ্ট সবই যেন বৃথা গিয়েছিল। অনেক চেষ্টা করছিলাম সম্পর্কটা বাঁচানোর, বলেছিলাম ওর বাবার সাথে আমি কথা বলবো,
' কিন্তু ও বলেছিল দরকার নেই। আমিও আর মানাতে পারি নি। এর মাঝে একদিন ও আমায় জড়িয়ে ধরে খুব কেঁদেছিল আর বলেছিল,
' ভুলভাল কিছু করবে না সবসময় ভালো থাকবে। দেখো আমি চলে যাওয়ার পর তোমার জীবনের সব ভালো হবে। আমাকে জন্য এতদিন যা যা কষ্ট করেছো সব চলে যাবে। তোমার সুন্দর একটা জীবন হবে।'
উওরে আমি সেদিন কিছুই বলি নি বড্ড অভিমান ছিল কিনা।'
এরপর বিয়ের দিন সইতে না পেরে ওদের বাড়ি গিয়ে বলেছিলাম,
' চলো পালিয়ে যাই, আমার ওপর বিশ্বাস রাখো দেখবে আমরা ঠিক ভালো থাকবে।'
সেদিন ও কি বলেছিল জানো। উওরে নীলা নিরাশা ভরা চোখ নিয়ে তাকিয়ে বললো,
' বলেছিল আমি নিজের থেকেও বেশি বিশ্বাস তোমায় করি কিন্তু বিয়েটা আমায় করতেই। তোমার জন্য হলেও করতে হবে।'
সেদিন এতটুকু বলে চলে যায় শুধু। সেদিন এই কথার অর্থ না বুঝলেও এখন বুঝি। ওর জন্যই আমি একটা ভালো কোম্পানি থেকে বিনা সুদে সরকারি চাকরি পাই। শুনেছিলাম ওর বাবার কাছে শর্ত রেখেছিল নাকি আমার ভালো চাকরি ভালো জীবন কাটানোতে সাহায্য করবে আর তাঁর বিনিময়ে তাঁর বাবা যাকে বিয়ে করতে বলতে তাঁকেই করবে। তারপর তাই হলো ওর বাবার জন্য আর ওর জন্যই চাকরি হলো। ধীরে ধীরে নিজের দারিদ্র্যতা সব ঘুচে গেল। বড় বাড়ি বড় গাড়ি সবই হলো কিন্তু আফসোস একটা থেকেই গেল। আমি ওঁকে পেলাম না। জীবনটা একা একাই কেটে গেল।'
ভেবেই দীর্ঘ শ্বাস ফেললো লোকটি। লোকটির কথা শুনে মনটা ভীষণভাবে খারাপ হয়ে গেল নীলার। ভালোবাসার গল্প যে এমনও হয় জানা ছিল না তাঁর। নীলা মন খারাপ হয়েই বলে উঠল,
' আপনি আর বিয়ে করেন নি কেন?'
নীলার কথা শুনে ছলছল চোখে নীলার দিকে তাকিয়ে বললো,
'আজও ভালোবাসি তাই'

এবারের কথা শুনে চরম অবাক হয়েই বললো নীলা,
' এখনও তাঁকে ভালোবাসেন?'
' হুম।'
সময়টা তখন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। আশেপাশের পরিবেশটাও লালচে বর্ন ধারন করেছে হয়তো সূর্য্যিমামা এখনই চলে যাওয়ার ফন্দি এঁটেছে। আশেপাশের পরিবেশ দেখে আবারো বলে উঠল লোকটি,
' এখন আমায় যেতে হবে সন্ধ্যা হয়ে এসেছে আর তুমিও যাও।'
বলেই নিজের কাগজপত্রগুলো গুছিয়ে উঠে দাঁড়ালো লোকটা। নীলা কিছুটা হতাশা ভরা কন্ঠ নিয়ে বললো,
' কি নাম ছিল তাঁর?' আর আপনার নামটাই বা কি?'
উওরে মুচকি হেঁসে বললো আহিল,
' আহিল আর তাঁর নাম?'
আর কিছু বলার আগেই ফোনটা বেজে উঠল আহিলের উপরে মায়ের নাম্বার দেখে মুচকি হেঁসে বললো সে,
' আসছি আমি।'
এমন সময় নীলার মা এসে হাজির হুট করেই এমন সময় মাকে এখানে দেখে বলে উঠল নীলা,
' মা তুমি এখানে?'
' হুম আমি। বাড়ি চল তোর সাথে কথা আছে।'
' কেন মা কি হয়েছে?'
এদিকে,
ফোনে কথা বলে পিছন ফিরতেই নীলার সামনে কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আর কিছু বলতে পারলো না আহিল কথা বলতে বলতেই এগিয়ে গেল সে বাড়ির উদ্দেশ্যে। মহিলাটা উল্টো দিকে ঘুরে থাকায় তাঁর ফেসটা দেখতে পারলো না আহিল। আর এদিকে নীলা মায়ের সাথে যেতে যেতে বলে উঠল,
' জানো তো মা আজ এক আক্কেলে সাথে কথা হলো তাঁর জীবনের কাহিনি শুনলাম খুবই খারাপ লাগলো সে এক মেয়েকে ভালোবাসতো কিন্তু পরিস্থিতি তাদের এক হতে দেয়নি।'
' ওহ তাই।
' হুম আক্কেলটার নাম আহিল কিন্তু মেয়েটার নামটা শুনতে পারলাম না তার আগেই তুমি চলে এলে।'
'আহিল' নামটা শুনতেই বুকটা কেঁপে উঠলো চারুলতার। পিছন ঘুরে তাকালোও একবার কিন্তু লোকটার চেহারা আর দেখতে পারলো না সে। পড়ে ভাবলো এক নামে তো কতই মানুষই থাকে।'
অতঃপর দুজন দুদিকে চলে গেল। তাঁরা জানতেই পারলো না খুব কাছে থেকেও দেখা মিললো না দুজনের। কেউ স্বামী, সংসার, ছেলে-মেয়ে নিয়ে সময়ের সাথে সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারলেও আরেকজন রয়ে গেল একা শুধুই একা। দীর্ঘ শেষে যেন একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলায় তাঁর দৈনন্দিন এক রুটিন।'
0 Comments